• প্রশাসন

ঠাকুরগাঁওয়ে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকুরী পেল ৫৩ জন

  • প্রশাসন
  • ২১ মার্চ, ২০২৩ ১৭:৫২:০৫

ছবিঃ সিএনআই

আব্দুল আওয়াল, ঠাকুরগাঁওঃ  ঠাকুরগাঁওয়ে ১২০ টাকায় পুলিশের কনস্টেবল পদে ৫৩ জনের চাকুরী হয়েছে। মঙ্গলবার পুলিশ লাইনহ ড্রিল শেডে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে চুড়ান্ত ৫৩ জনের পরিচিতি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫৩ জন বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জানান, কোন প্রকার অতিরিক্ত টাকা পয়সা ছাড়াই শুধুমাত্র আবেদনের ১২০ টাকা দিয়েই তাদের কনস্টেবল পদে চাকুরী হয়েছে। এ কারনে তারা খুবই খুশি ও পুলিশ সুপারসহ নিয়োগ সংক্রান্ত কাজে জড়িতদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানায়। 

কনস্টেবল পদে চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বানাগাঁও গ্রামের ধনেশ^র চন্দ্র সিংহের ছেলে অজয় কাপালী সিংহ বলেন, ১২০ টাকায় আবেদন করে পুলিশের চাকুরী হলো, আমরা অনেক খুশি। জেলার হরিপুর উপজেলার রিতু আক্তার আবেগ আপ্লত হয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার পিতা একজন দিনমজুর। আমরা ৪ বোন ১ ভাই। ১২০ টাকায় আমার পুলিশের চাকুরী হয়েছে বিশ^াস হচ্ছে না। তবে আমার বাবা ও মায়ের সম্মানের জন্য নিষ্ঠার সাথে চাকুরী করতে চাই।  

একই ভাবে দিনমজুরের সন্তান হরিপুর উপজেলার বকুয়া গ্রামের মোবারক আলীর মেয়ে রিতু আক্তার, সদর উপজেলার ছোট বালিয়া গ্রামের আষাড়– বর্মনের ছেলে শান্ত বর্মন, পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট বলিদিয়ারা গ্রামরে এনামুল হকের ছেলে মো: লাভলু জানায়, ১২০ টাকায় পুলিশের চাকুরী হওয়ায় তারা তাদের দায়িত্ব ও কর্তৃব্য নিষ্ঠার সাথে পালন করতে চায়। একই সাথে বালিয়াডাঙ্গী মাহাত বস্তি স্কুলের হাট গ্রামের এতিম সন্তান মো: নুর আলমও এ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িতদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানায়। ঠাকুরগাঁও সরকারি শিশু পরিবার (বালিকার) এতিম শিশু মুমতাহিনা আক্তার মিতু বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর মা অন্যত্র বিয়ে করেন। এভাবে ১২০ টাকায় আমার পুলিশে চাকুরী হবে ভাবতে পারিনি। আগে শুনেছিলাম অনেক টাকা পয়সা দিয়ে পুলিশে চাকুরী হয়। এ কারনে আমি অনেক খুশি। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ডিসেম্বর ২০২২ সালের পুলিশ কনস্টেবল পদে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল ইতিমধ্যে প্রকাশ হয়েছে। সাধারণ পুরুষ, অন্যান্য কোটা ও নারী মিলে ৫৩ জন চুড়ান্ত ভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। নিয়োগ কার্যক্রমে নতুন একটি পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে তাদের ৭টি গুরুত্বপুর্ন ধাপ পেরিয়ে আসতে হয়েছে। নিয়োগের ব্যাপারে বিভিন্ন স্থানে ভিডিও প্রদর্শন করেছি। ভিডিও’র মাধ্যমে মেসেজ ছিল নিয়োগে কোনভাবেই অর্থনৈতিক সংযোগে, কোন কু-চক্রী মহলের কোন আশসে চাকুরী হবে না; সম্পুর্ন যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকুরী হবে। যারা চান্স পেয়েছে তারা সম্পুর্ন তাদের মেধা ও যোগ্যতায় চাকুরী পেয়েছে। এখানে কৃষকের সন্তান, দিনমজুর, এতিমের সন্তান রয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশ যে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহীতার ধারায় পরিচালিত হয়ে নিয়োগ কার্যক্রমে শুরু করেছে, সেটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

নিয়োগ কার্যক্রমকে লক্ষ্য করে ইতিমধ্যে ২টি দালাল চক্রকে গ্রেফতার করেছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার সূত্র ধরে গতকালকেও আরও ২ জনকে গ্রেফতার করেছি। উল্লেখ্য যে, কনষ্টেবল পদে পুরুষ ও নারী মিলে মোট ১ হাজার ৮৫৫ জন আবেদনকারীর মধ্যে প্রথম দিনে মাঠে উপস্থিত হয় ১ হাজার ৪০৬ জন। সকল ইভেন্ট শেষে ৩৬৭ জন প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়ে লিখিত পরীক্ষায় মোট ৩৬৫ জন অংশ নিয়ে ৯৯ জন উত্তীর্ণ হয়। মৌখিক শেষে ৯৯ জনের মধ্যে ৫৩ জন চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়। এর মধ্যে পুরুষ ৪৫ জন ও মহিলা ৮ জন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo