• আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ

সরকারের বিরুদ্ধে সংস্কার, বিক্ষুব্ধ ইসরায়েলিদের বিক্ষোভ চলছেই

  • আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ
  • ১৯ মার্চ, ২০২৩ ১০:০৪:১০

ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থি সরকারের বিরুদ্ধে আবারও বিক্ষোভ করেছেন ইসরায়েলি নাগরিকরা। মূলত নেতানিয়াহুর নতুন সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে শনিবার (১৮ মার্চ) টানা বিক্ষোভের অংশ হিসেবে রাস্তায় নামেন হাজারও মানুষ।মূলত বিচার ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্য সরকারি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে গত ১১ সপ্তাহ ধরে ভূখণ্ডটিতে এই বিক্ষোভ চলছে। রোববার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলিরা টানা ১১ তম সপ্তাহে শনিবার বিক্ষোভে নামেন এবং ভূখণ্ডটির বহু শহরের রাস্তা এদিন কার্যত পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা কমানোর জন্য কট্টর ডানপন্থি নেতানিয়াহু সরকারের পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন।

সমালোচকরা বলছেন, ইসরায়েলি সরকারের এই পরিকল্পনা বিচারিক স্বাধীনতার জন্য হুমকি। যদিও প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলি সরকারের শাখাগুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাই তার লক্ষ্য। ধর্মীয়-জাতীয়তাবাদী জোট মিত্রদের সাথে নিয়ে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও নেতানিয়াহুর পরিকল্পিত এই বিচারিক সংশোধন বা সংস্কার ভূখণ্ডটিতে এবং বিদেশে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। নেতানিয়াহু সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার সমালোচকরা বলছেন, এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তবে নেতানিয়াহুর সরকার বলছে, তাদের পরিকল্পিত এই পরিবর্তনই ভোটারদের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে। সংবাদমাধ্যম বলছে, ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থাকে সংশোধন এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা সম্প্রতি উন্মোচন করেছে ইসরায়েলের নতুন সরকার।

এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হলে ইসরায়েলের পার্লামেন্টের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলোকে বাতিল করা সহজ হবে। তবে সমালোচকরা বলছেন, নেতানিয়াহু সরকারের এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের বিচারিক স্বাধীনতাকে পঙ্গু করবে, দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করবে, সংখ্যালঘুদের অধিকার নষ্ট করবে এবং ইসরায়েলের আদালত ব্যবস্থাকে বিশ্বাসযোগ্যতা থেকে বঞ্চিত করবে। এছাড়া নতুন এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরায়েলের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সিস্টেমকে হুমকির মুখে ফেলবে বলেও দাবি করে আসছেন বিক্ষোভকারীরা। মূলত ওই আইন পাস হলে আইনসভা এবং নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমিত হয়ে যাবে। একইসঙ্গে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তমূলক ক্ষমতা পাবেন পার্লামেন্টের আইন প্রণেতারা। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার সংস্কারের জন্য সুপ্রিম কোর্টকে লক্ষ্যবস্তু করার পর জানুয়ারির প্রথম দিক থেকে প্রতি সপ্তাহের শনিবার বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলি বিক্ষোভ করে আসছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার ভূখণ্ডটিতে টানা ১১তম সপ্তাহের মতো বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলো। রয়টার্স জানিয়েছে, নেতানিয়াহু সরকারের এই সংস্কার পরিকল্পনা অনুমোদনের দিকে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে ইসরায়েলে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ আরও বেড়েছে। এতে করে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং ইসরায়েলি মুদ্রাও কিছুটা মূল্য হারিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ বিচারিক সংস্কার পরিকল্পনা স্থগিত করার জন্য আবেদন করেছেন এবং গত বুধবার একটি বিকল্প পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু খুব দ্রুতই তা প্রত্যাখ্যান করেন। শনিবার তেল আবিবে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন রোনেন শাইক নামে ৪৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তি।

তার অভিযোগ, নেতানিয়াহু সরকার দেশকে ধ্বংস করতে চায় এবং তিনি দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, পরিকল্পিত বিচারিক সংস্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে আমি আমার বন্ধুদের সাথে তেল আবিবে এসেছি। তেল আবিবের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৭২ বছর বয়সী ডালিয়া ইয়োসেফ বলছেন, ‘আমি এখানে ইসরায়েলের জনগণকে সাথে নিয়ে বিপ্লবের বিরুদ্ধে, আমাদের রাষ্ট্রের পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে এসেছি।’ অবশ্য গত ডিসেম্বরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী পদে ফিরে আসা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলছেন, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যেই রাস্তায় এসব বিক্ষোভ করা হচ্ছে। ইসরায়েলি এই প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে তিনটি দুর্নীতির মামলায় আদালতে বিচারাধীন রয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo