• বিশেষ প্রতিবেদন

ঠাকুরগাঁওয়ে ধান ছেড়ে আমে ঝুঁকছেন কৃষকরা

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ০৪ মার্চ, ২০২৩ ১০:৩০:০৮

ছবিঃ সিএনআই

আব্দুল আউয়াল, ঠাকুরগাঁওঃ বসন্তের শুরুতেই যেন ছন্দ ফিরে পেয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের আমবাগানগুলো। শোভা পাচ্ছে মুকুলের সোনালি উজ্জ্বলতা। একই সঙ্গে গাছ থেকে উন্নতমানের মুকুল পেতে ব্যস্ততা বেড়েছে আমচাষিদের। বেশি সাশ্রয়ী ও লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা এখন ধানের পরিবর্তে আম চাষে ঝুঁকছেন।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, গত তিন বছরে এ জেলায় ১৬৫টি আমবাগান বেড়ে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ শ’রও বেশি। গত ১০ বছরে এখানে আমবাগানের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। বেশি মুনাফার আশায় কৃষকদের আগ্রহ এখন আম্রপালি, থাই কাটিমন, ব্যানানা ম্যাংগো, ল্যাংড়া, ক্ষীরশাপাতিসহ উন্নতজাতের আমের দিকে।

তবে আমের সংরক্ষণ আর প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা থাকলে উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত কৃষক, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান আরও বেশি লাভবান হতো। এতে করে সারাবছরই এ জেলায় আম পাওয়া যেত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর, হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জসহ জেলার পাঁচটি উপজেলায় বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধান, গম, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলে বারবার লোকসান হওয়ায় আমের বাগানের দিকে ঝুঁকছেন তাঁরা। এতে প্রতিবছরই নতুন নতুন বাগান গড়ে উঠছে।

সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি এলাকার কিবরিয়া মণ্ডল জানান, ৩০ বিঘা জমিতে আমবাগান করেছেন। ছয় বছর হলো তাঁর বাগানের। প্রায় সাত হাজার গাছের এই বাগানে শুধু জায়গা পেয়েছে ব্যানানা ম্যাংগো ও বারি-চার জাতের আমগাছ। গত বছর বাগান থেকে তিনি প্রায় সাড়ে ৯ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন। তবে এবার মুকুল বেশি হওয়ায় আগের চেয়েও বেশি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা তাঁর।

একই উপজেলার জগন্নাথপুরের আব্দুস সোবহান সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে আমবাগান করেছেন। তিনিও বাগানে লাগিয়েছেন দেশি জাতের ল্যাংড়া, ক্ষীরশাপাতি, ফজলি। তিনি বলেন, চার বছর আগে এ জমিতে ধান, ভুট্টার ফসল করতাম; কিন্তু লোকসানের পর লোকসান হওয়ায় জমিতে আমবাগান করতে হয়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে আম লাভজনক।

হরিপুর কাঁঠালডাঙ্গী উপজেলার আমচাষি বদরুল ইসলাম বলেন, এবার প্রায় সব গাছেই মুকুল এসেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরূপ ফলন মিলবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে যেখানে আমবাগান ছিল ১ হাজার ৬৭৯টি, সেখানে এ বছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৪৪টি।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) আলমগীর কবির বলেন, এ বছর ৪৬ হাজার ৭৮১ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যার সম্ভাব্য মূল্য ২২১ কোটি টাকা। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এবার আমের উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা করছেন এই কর্মকর্তা।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo