• লাইফস্টাইল

কোন খাবারে কোন ভিটামিন আছে জেনে রাখুন

  • লাইফস্টাইল
  • ২১ জানুয়ারী, ২০২৩ ১৫:৩৫:৫৯

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ হলো জৈব খাদ্য উপাদান। যা সাধারণ খাদ্যে অতি অল্প পরিমাণে থেকে দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। দেহে ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণের অভাবে বিভিন্ন রোগ বা সমস্যার প্রাদুর্ভাব হয়।

ভিটামিন আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী ক্যাশিমির ফ্রাঙ্ক ১৯১২ সালে। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন আছে, যেগুলোর শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত গ্রহণ করা জরুরি।

তবে অনেকেরই হয়তো জানা নেই কোন খাবারে কোন ভিাটামিন আছে, তা সম্পর্কে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-

ভিটামিন এ

এই ভিটামিন চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। শরীর সুস্থ রাখতে এই ভিটামিনের বিকল্প নেই। তবে অনেকেরই হয়তো জানা নেই কোন কোন খাবারে মেলে এই ভিটামিন। জেনে নিন-

. দুধ
. ডিম
. গাজর
. মিষ্টিকুমড়া
. সজনে
. পেঁপে
. আম
. কচু শাক
.ছোট মাছ ইত্যাদি।

ভিটামিন সি

দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভিটামিন সি এর ভূমিকা অনেক। এমনকি রক্তকণিকা তৈরি ও হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে এই ভিটামিন। এছাড়া শরীরে আয়রন শোষণে ও ক্ষত সারাতে সাহায্য করে এমনকি মস্তিষ্কের কার্যক্রমকেও সচল রাখে।

ভিটামিন সি বয়সজনিত বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কোন কোন খাবারে মেলে এই ভিটামিন জেনে নিন-

.আমড়া
. আমলকি
.পেয়ারা
.আনারস
. কলমি শাক
. সজনে
. কাঁচা মরিচ
. লেবু
.বাঁধাকপি ইত্যাদি।

ভিটামিন ডি

এই ভিটামিন শরীরের হাড় মজবুত করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন ডি এর উৎস কী কী জেনে নিন-

. সূর্যালোক
. ডিমের কুসুম
.কলিজা
. সার্ডিন মাছ
. দেশীয় ছোট মাছ ইত্যাদি।

ভিটামিন ই

ভিটামিন ই দেহকোষকে ধ্বংসের হাত থেকে সুরক্ষা দেয়। লোহিত রক্ত কণিকার জন্য এই ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ই এর উৎসসমূহ সম্পর্কে জেনে রাখুন-

. সূর্যমুখীর তেল
. সয়াবিন তেল
. বাদাম
. কাঠবাদাম
. পেস্তা বাদাম
. আখরোট
. গম ইত্যাদি।

ভিটামিন বি-১

আমাদের শরীরে ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন) শক্তি উৎপাদন, নার্ভ রক্ষা, ক্ষুধা বাড়ানো, হৃদরোধ প্রতিরোধ, চোখে ছানি পড়া রোধ, স্মৃতিশক্তি উন্নত করা’সহ অ্যান্টি এজিংয়ের ভূমিকা পালন করে। এর উৎস হলো-

. ফুলকপি
. লাল চাল
. মটরশুঁটি
. কলিজা মাশরুম
. মসুর ডাল ইত্যাদি।

ভিটামিন বি-২

এই ভিটামিন (রিরোফল্যাবিন) শরীরে খাদ্যের কার্বোহাইড্রেটকে শক্তিতে রূপান্তর, লোহিত রক্ত কণিকা সৃষ্টি, মুখে ঘা, ঠোঁট ফাটা, অবসাদগ্রস্ততা ও খুশকি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এর উৎসসমূহ হলো-

.পুঁইশাক
. দুধ
. কলিজা
. বাদাম
. সজনে ডাটা
.ডিম
. মাংস ইত্যাদি।

ভিটামিন বি-৩

শরীরে ভিটামিন বি-৩ (নিয়াসিন) স্নায়ুতন্ত্রকে সজীব ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এমনকি খাদ্যকে শক্তিতে পরিবর্তনে সাহায্য করে। এর উৎসগুলো হলো-

. মাংস
. ফল
. বাদাম
. মাছ
. মাশরুম
. লাল চাল ইত্যাদি।

ভিটামিন বি-৫

শরীরে ভিটামিন বি-৫ (প্যান্টাথনিক অ্যাসিড) ত্বক, চুল, চোখ ও লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এমনকি চর্বি ও কার্বোহাইড্রেট ভেঙে শক্তিতে রূপান্তর করে। এর সবচেয়ে ভালো উৎস হলো-

. গম
.মাংস
. মাছ
.টমেটো
. ডিম
. দুধ
. ফুলকপি ইত্যাদি।

ভিটামিন বি-৬

ভিটামিন বি-৬ (পাইরিডক্সিন) মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রকে সজীব রাখাসহ দেহের প্রোটিনকে ভেঙে লোহিত কণিকা তৈরিতে ভূমিকা রাখে। কোন কোন খাবারে এই ভিটামিন মিলবে জেনে নিন-

. মাছ
. গুড়
. মাংস
. সয়াবিন
. কলা
. ডিম ইত্যাদি।

ভিাটামিন বি-৭

ভিটামিন বি-৭ (বায়োটিন) দেহে আমিষের বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় সহায়তার পাশাপাশি গ্লুকোজকে শক্তিতে রূপান্তর করে। এটি চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। এর উৎসসমূহ হলো-

. পনির
. দই
. বরবটির বীজ
. মিষ্টি আলু
. গাজর
. টমেটো
. ডিমের কুসুম
. শাক
. পেঁয়াজ ইত্যাদি।

ভিটামিন বি-৯

এই ভিটামিনের রাসায়নিক নাম ফলিক অ্যাসিড। এটি মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ায়। এছাড়া দেহে লোহিত রক্ত কণিকা সৃষ্টি ও আমিষ জাতীয় খাদ্যকে বিপাকে সাহায্য করে। এমনকি শিশুর জন্মগত ত্রুটিও প্রতিরোধ করে। এর উৎস হলো-

. টমেটো
. বাদাম
. কলা
. শিম
. সয়াবিন
.পেঁপে
.ঢেঁড়স
.পালং শাক
. মাছ ইত্যাদি।

ভিটামিন বি-১২

ভিটামিন বি-১২ (সায়ানোকোবালামিন) দেহে লোহিত রক্ত কণিকা সৃষ্টিতে সহায়তা করে। এছাড়া স্নায়ুকোষের কার্যক্ষমতাও বাড়ায়। এই ভিটামিন কোন কোন খাবারে মিলবে জেনে রাখুন-

. কলিজা
. মাছ
. মাংস
. ডিমের কুসুম ইত্যাদি।

ভিটামিন কে

এই ভিটামিন দেহের রক্ত জমাট বাধা ও বিপাক প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রোথ্রোমবিন তৈরিতে সহায়তা করে। এই ভিটামিন কোন কোন খাবারে মিলবে জেনে নিন-

. সবুজ পাতাযুক্ত শাক
.সয়াবিন
. ডিম
. ফুলকপি
. মিষ্টিকুমড়া ইত্যাদি।

আয়রন বা লৌহ

রক্ত স্বল্পতা দূর করে ও রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করে আয়রন। এই ভিটামিন কোন কোন খাবারে মিলবে জেনে রাখুন-

. মাছ
. মেথি শাক
. শিমের বীজ
. গুড়
. ডাল
. বাদাম
. সয়াবিন
.কিসমিস
. কচু
.সজনে
. খেজুর
.ছোলা ইত্যাদি।

ক্যালসিয়াম

হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ক্যালসিয়াম। এমনকি হার্টও ভালো থাকে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খেলে। কোন কোন খাবারে মিলবে এই ভিটামিন জেনে নিন-

.পনির
. দই
. ডুমুর
. সয়াবিন
. পালং শাক
. বাঁধাকপি
.সজনে
. দুধ
. ছোলা ইত্যাদি।

পটাসিয়াম

হদযন্ত্র, মাংসপেশী ও স্নায়ুতন্ত্রকে কার্যকর রাখতে মূল ভূমিকা পালন করে পটাসিয়াম। এছাড়া এটি শরীরের পানির ভারসাম্য রক্ষাসহ দেহকোষকে সজীব রাখতে সাহায্য করে।

.ডাব
. কলা
. শিমের বীজ
. বরই
. সয়াবিন
. মিষ্টি আলু
. বাদাম
. শাক
. খেজুর
. কিসমিস
. গুড়
. দই
. মাসকালাই ইত্যাদি।

জিংক

দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ক্ষত নিরাময়ে জিংকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। কোন কোন খাবারে মিলবে জিংক?

. চিংড়ি মাছ
. ছোলা
. বরবটির বীজ
. ডাল
.সয়াবিন
. কাঠবাদাম
. কাজুবাদাম
.মাংস
. ডিম
. পনীর
. দই
. মাশরুম ইত্যাদি।

আয়োডিন

শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য আয়োডিনের বিকল্প নেই। গ্রহণকৃত খাবারের হজমশক্তি বৃদ্ধি, শোষণ, সংগ্রহণ ও মল নিঃসরণে সহায়তা করে আয়োডিন।

শরীরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পুষ্টি উপাদান পৌঁছায় এটি। আয়োডিনের অভাবে গলগণ্ড রোগ হয়। এর উৎস হলো-

.সামুদ্রিক মাছ
. আয়োডিনযুক্ত লবণ
. রূপচাঁদা মাছ
. শুটকি মাছ
. পোয়া মাছ
. কোরাল মাছ
.লইট্টা মাছ ইত্যাদি।

সূত্র: বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo