• কূটনৈতিক সংবাদ
  • লিড নিউজ

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা শুধু রোহিঙ্গাদের সংকটই নয়, তাদের সমাধানও

  • কূটনৈতিক সংবাদ
  • লিড নিউজ
  • ২৪ আগস্ট, ২০২২ ২২:৩৮:৫৬

ছবিঃ সিএনআই

নিউজ ডেস্কঃ রোহিঙ্গা গণহত্যার পাঁচ বছর পূর্তিতে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা বাংলাদেশী এবং আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিত’ বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৪ আগস্ট (বুধবার)  নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউতে) সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) এর সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) সেমিনারটি আয়োজন করে।

এ সময় প্রধান বক্তা  ড. সৈয়দ হামিদ আলবার উপস্থিত ছিলেন। ড. সৈয়দ হামিদ মালয়েশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বর্তমানে ওয়ার্ল্ড ইসলামিক ইকোনমিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, ও মালয়েশিয়ার কেবাংসান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক। সেমিনারে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।  

এই প্রথম সিপিএস সেমিনারে ‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের পাঁচ বছর, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ’ বিষয়ক রেজুলেশন এবং দিকনির্দেশনা বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করে। 

সেমিনারে মালয়েশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সৈয়দ হামিদ আলবার বলেন, “আসিয়ান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনও রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি যথাযথ ও পর্যাপ্ত মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাস্তবে, আসিয়ানের এই সংকট সমাধানে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা সীমিত। মায়ানমার ইতিমধ্যেই আসিয়ান এমনকি চীনের কাছ থেকে পরিস্থিতি উন্নতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। মায়ানমারের অসহযোগিতা মূলক আচরণ আসিয়ানকে বাধ্য করেছে রোহিঙ্গা সংকটকে তাদের অগ্রাধিকার এজেন্ডা থেকে বাদ দিতে।

তিনি আরও বলেন যে চীন ও ভারতীয়রা রাখাইন রাজ্যে তাদের বিপুল বিনিয়োগের কারণে মিয়ানমারের প্রতি তাদের সমর্থন দেখাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তিনি মনে করেন যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনের সম্ভাব্য লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি স্বাধীন ও সার্বজনীন তদন্ত পরিচালনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন করা উচিত”।     

এসময় ” বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব এম এ মান্নান এমপি বলেন, “যেহেতু রোহিঙ্গারা নিজেরাই তাদের দেশে ফিরে যেতে চায়, তাই তাদের বাংলাদেশে একীভূত করা কোনো সমাধান নয়।  মন্ত্রী রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার এবং মিয়ানমারে বসবাস করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের সরকার মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সাথে প্রত্যাবাসনের জন্য আলোচনার চেষ্টা করছে। 

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এনএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, “এই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং পুরো বিশ্বের কিছু দায়িত্ব রয়েছে”। উপরন্তু, তিনি বলেন, যেহেতু মিয়ানমারের প্রতি চীন, ভারত ও রাশিয়ার সমর্থন রয়েছে, তাই পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা তাদের ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। তাই বাংলাদেশের উচিত মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠানো।   

গত ২৩ এবং ২৪ আগস্ট ২০২২ তারিখে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে রোহিঙ্গা গণহত্যার পাঁচ বছরের স্মরণে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রথম দিনে এনএসএউ ক্যাম্পাসে শরণার্থী সম্পর্কিত সিনেমা প্রদর্শিত হয়। এনএসইউ ছাত্ররা সিনেমা প্রদর্শনে যোগ দেয়। আর ২য় দিনে অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক সেমিনার। 

২০১৭ সালে গণহত্যা ও নৃশংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে সেমিনার শুরু হয়। এরপর সূচনা বক্তব্য দেন সিপিএস এবং এসআইপিজির পরিচালক প্রফেসর তৌফিক এম হক। সিপিএস রেজোলিউশন এবং রোহিঙ্গা সঙ্কটের উপর দিকনির্দেশনা বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. ইশরাত জাকিয়া সুলতানা, সহকারী অধ্যাপক, এনএসইউ। এই রেজোলিউশনটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থানরত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা সঙ্কটের দ্রুত সমাধান এবং একটি টেকসই সমাধানের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের কাছে একটি আবেদন।  

এনএসইউ এর সিনিয়র লেকচারার মিজ পারিসা সাকুর এর সঞ্চালনায় সেমিনারটি সম্পূর্ণ হয়। সেমিনারে বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার, শিক্ষাবিদ, গবেষক, কূটনীতিক, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo