পাবনায় ভ্যানচালককে বিষ খাইয়ে হত্যার দায়ে এক যুবকের যাবজ্জীবন

ছবিঃ সিএনআই

তোফাজ্জল হোসেন,পাবনাঃ পাবনার চাটমোহর উপজেলার নুরুল ইসলাম মণ্ডল (২২) নামের এক ভ্যানচালককে পেপসির সঙ্গে বিষ খাইয়ে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনায় এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

সোমবার (৪ জুলাই) দুপুরে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রবীন্দ্রনাথ হালদার (৩৭) উপজেলার বামনগ্রামের গোপেশ্বর হালদারের ছেলে। আসামি ঘটনার সময় গ্রেফতার হলেও জামিন পাওয়ার পর পলাতক রয়েছেন। আর নিহত নুরুল ইসলাম মণ্ডল উপজেলার পুরান ধানবিলার শুকর আলী মণ্ডলের ছেলে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শামসুল হুদা।

এজাহার সূত্রে জানায়, ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে ভাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হোন নুরুল। পরে রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরের দিন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনও সন্ধান পান না স্বজনরা। পরবর্তীতে ১৪ অক্টোবর নুরুলের স্বজনরা চাটমোহর থানার শরণাপন্ন হোন। এসময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি পাশের ভাঙ্গুড়া থানায় একটি লাশ উদ্ধারের সংবাদ দেন। পরে ভাঙ্গুড়া থানায় গিয়ে নিহত নুরুলের ছবি দেখে শনাক্ত করেন স্বজনরা। তার আগেই নুরুলের লাশ ভাঙ্গুড়ার শরৎনগর রেল স্টেশন থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করা হয়।

পরেরদিন গ্রামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে আসামি রবীন্দ্রনাথ হালদারের সঙ্গে ভ্যান চালক নুরুলের বাজারে যাওয়ার কথা জানতে পারেন স্বজনরা। পরে রবীন্দ্রনাথ পুলিশের মাধ্যমে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার কথা শিকার করেন রবীন্দ্রনাথ। সে স্বীকার করে যে, নিহতের ভ্যান ছিনতাইয়ের জন্য তার ভ্যানে উঠেন এবং পথে পেপসির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে তাকে হত্যা করেন। লাশ শরৎনগর রেল স্টেশনের পাশে ফেলে দিয়ে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যান রবীন্দ্রনাথ। জিজ্ঞাসাবাদের পর আসামির বাড়ি থেকে নিহতের ভ্যানও উদ্ধার করা হয়।

এঘটনায় ওইদিনই নিহতের ভাই মো. সেলিম মণ্ডল বাদী হয়ে চাটমোহর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের পর চার্জশিট দাখিল ও দীর্ঘ শুনানি শেষে প্রায় ১০ বছর পর আজ সোমবার রায় ঘোষণা করা হলো।