• আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ

বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা,মূদ্রাস্ফীতি ছাড়াল ৫০ শতাংশ

  • আন্তর্জাতিক
  • লিড নিউজ
  • ০২ জুলাই, ২০২২ ১৩:৪৯:১৩

ছবিঃ সংগৃহীত

 

চরম অর্থ ও রাজনৈতিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কায় রেকর্ডের পর রেকর্ড ভাঙছে মুদ্রাস্ফীতি। একমাসের মধ্যে নয়বার সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির রেকর্ড গড়েছে। জুন মাসজুড়ে দেশটির অর্থনীতিতে এই তীব্র টানা পোড়ন দেখা যায়। সবশেষ মাসের শেষ দিন ৩০ জুন প্রথমবারের মতো কলম্বো কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিসিপিআই) ৫০ শতাংশের মাত্রা অতিক্রম করে।

শ্রীলঙ্কা সরকারের তথ্যমতে স্থানীয় গণমাধ্যম কলম্বো গ্যাজেট বলছে, জুন মাসের শেষ দিন বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার মূদ্রাস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ৫৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এটিকে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মূদ্রাস্ফীতি হিসেবে দেখছে আদমশুমারি ও পরিসংখ্যান বিভাগ।

গত বছরের অক্টোবর থেকেই দেশটির মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ বাড়ছে। অক্টোবরে শ্রীলঙ্কার মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি বছরের মে মাসে এটি বেড়ে হয় ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ। এদিকে চলতি বছর মার্কিন ডলারের তুলনায় রুপির মূল্য অর্ধেকেরও বেশি কমেছে। ফলে দেশটির অর্থনীতিতে ধাক্কা আরও বাড়ছে।

বেসরকারি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকারি পরিসংখ্যানে দেখানো অংকের তুলনায় কনজিউমার প্রাইস আরো দ্রুত বাড়ছে।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ স্টিভ হ্যাঙ্কের মতে, বর্তমান বিশ্বে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির রেকর্ড জিম্বাবুয়ের। দেশটির মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ ৩৬৫ শতাংশ। এরপরেই দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার অবস্থান, দেশটির বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি ১২৮ শতাংশ।

দ্বীপরাষ্ট্রটি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঋণখেলাপি হয়েছে। দেশটি ৭০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটের সঙ্গে লড়াই করছে। দেশটির অপরিশোধিত ঋণের পরিমাণ ৭৮ মিলিয়ন ডলার। এর সুদ পরিশোধের মেয়াদ ১৮ মে শেষ হয়েছে। অতিরিক্ত ৩০ দিন সময়ের পরও ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। যেটাকে ‘প্রি-এমপটিভ ডিফল্ট’ হিসেবে দেখছেন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।

৫১ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ খেলাপির পর এ বছরের এপ্রিলে আইএমএফের কাছে সাহায্য চায় শ্রীলঙ্কা। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার কলম্বোতে শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষের সাথে ১০ দিনের আলোচনা শেষ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে বিপর্যস্ত অর্থনীতি উদ্ধারের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে শ্রীলঙ্কাকে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও দুর্নীতি মোকাবেলা করার আহ্বান জানিয়েছে আইএমএফ।

দক্ষিণ এশিয়ার ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কা। এই দ্বীপরাষ্ট্র ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির জন্যও প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রারও ঘাটতি রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক দুর্দশার কেন্দ্রবিন্দু হলো আমদানির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীলতা।

এই দেশের অর্থনীতি ধসের মূলে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে রাজাপক্ষে পরিবারের ভূমিকা বেশি বলে অভিযোগ দেশের জনগণের। এছাড়া কোভিড মহামারিতে এই দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০১৯ সালের গির্জা বোমা হামলায় পর্যটন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাকেও দায়ী করেছেন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঘাটতি। প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে ওষুধ, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo