• সমগ্র বাংলা
  • লিড নিউজ

দিনাজপুরে ৪০ এতিম কন্যার বিবাহোত্তর বিদায় অনুষ্ঠান

  • সমগ্র বাংলা
  • লিড নিউজ
  • ২৭ মে, ২০২২ ২০:৫৬:৪৮

ছবিঃ সিএনআই

সালাহ উদ্দিন,দিনাজপুরঃ দিনাজপুরে কোন যৌতুক ছাড়াই জাকজমক আয়োজনে এক আসরে রাজ কুমারির বেশে শিশু নিকেতনের ৪০ এতিম নিবাসী নারী চলে গেলো নতুন ঘরে নতুন স্বপ্নের ঠিকানায়। মেজবানিতে অংশ নিলেন  জাতীয় সংসদের হুইপ এবং জেলা প্রশাসকসহ নানা শ্রেণি পেশার সহ¯্রাধিক অতিথি। সরকারি বেসরকারি দানে পরিচালিত ওই মহতি অনুকরনীয় কাজে পাশে থাকতে পেরে খুশি সংশ্লিষ্টরা।

এতিম বলে আয়োজনের কমতি কোন ছিলনা ৪০ কন্যার যৌতুক ছাড়াই বিবাহোত্তর বিদায় অনুষ্ঠানে। মাথায় টোপর পরনে পায়জামা সেরোয়ানীতে সাজানো বরের পাশে আর লাল টুকটুকে বেনারসি শাড়িতে সাজানো হয়েছির বধুদের। শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এক আসরে পাত্র পক্ষের কাছে বিদায় জানানো হয়েছে তাদের।  সহ¯্রাধিক অতিথি অপ্যায়ন করা হয়েছে পোলাও গরু খাসির মাংস এবং রোষ্ট দিয়ে। প্রতিটি দম্পতিকে তুলে দেওয়া হয়েছে বালিশ বিছানাসহ ২৯ প্রকারের উপকরন । সংসার চালানোর সহায়ক হিসেবে বধুদের সেলাই মেশিন এবং একটি করে বাইকেল উপহার পেয়েছে বর। গ্রাম বাংলার চিরাচরিত বিয়ের রীতি রেওয়াজসহ নানান আনুষ্ঠানিকতায় মেতে উঠেন বরবধুপক্ষসহ অতিথিরা।  আনন্দ আয়োজনে এতিমতের কষ্ট বুঝতে দেওয়া হয়নি পিতা হারা কন্যাদের। 

দিনাজপুরের লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান মুন্না জানান, দেশি বিদেশী দাতা এবং লায়ন্স ক্লাব নামে একটি স্বেচ্ছসেবি সামাজিক সংগঠনের সহায়তায় ১৯৭৯ সালে দিনাজপুর শহরের নিমনগর বাস স্টান্ডে ৩৫ শতাংশ নিজস্ব জমিতে গড়ে উঠে অনাথ এবং এতিম মেয়েদের লালন পালন। পৃথিগত পোষাক তৈরি এবং কম্পিউটারসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দীক্ষার জন্য শিশু নিকেতন নামে (প্রতিষ্ঠানটি) এতিম খানাটি। শুরুতে ১০জন এতিম নিয়ে গড়ে উঠা ওই নিবাসে বর্তমানে আশ্রিত রয়েছে ১শত জন পিতা হারানো নারী এতিম শিশু। শুক্রবার (২৭ মে) ৪০জনসহ লালিত পালিতদের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাশের পর পূর্ণ বয়স্ক পৌছায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়েছে ১৭৪জনকে। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চান আয়োজকরা। 

শহর সমাজসেবা কার্যালয় কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম জানান. তবে কানাডা এবং নরওয়েসহ বিদেশী দাতা সংস্থার অনুদান বন্ধ হয়ে গেলেও থেমে থাকেনি এতিম নারীদের শিশুদের পূনর্বাসনের মহতি কাজ। গেল ১৫ বছর ধরে স্থানীয় সমাজসেবিদের পাশাপাশি সরকারের সমাজ কল্যান মন্ত্রণালয় ৫১ জন নিবাসি শিশুর জন্য বছরে দিচ্ছে ১২ লাখ ২৪ হাজার করে আর্থিক সহায়তা। ওই আর্থিক সহায়তার বদৌলতে লাঞ্ছনা ব না এবং পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পেয়ে আত্ব কমংস্থানের পাশাপাশি সমাজে নতুন জীবনের দিশা খুজে পাচ্ছে অনাথ এবং এতিম নারী শিশুরা। 

এদিকে সারাজীবনের সংগি বরের সাথে নতুন ঘর পরিবার পেয়ে খুশি নব বধুরা। তবে শিশু থেকে কৈশোর পেরিয়ে এতিম নিবাসের ছোট-বড় সার্থীদের ছেড়ে যেতে কষ্ট অনুভুব করেছেন অনেকে। অতীতের দুঃক্ষ কষ্ট মুছে আগামীটা আরো সুন্দরের প্রত্যাশা করছেন তারা। ২ বছর আগে বিয়ে এবং করোনার অতিমারির কারনে দেরিতে বিদায়ের কারনে অনেকে এসেছিল নব জাতক কোলে। 

ধুমধামের অয়োজনে খুশী বর-বধু পক্ষসহ সংশ্লিষ্টরা। এতিমরা যে সমাজের বোঝা নয়, এজন্য এধরনের মহতি কাজে অন্যরাও এগিয়ে আসবে বলে আশা করছেন তারা।

বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার দিনাজপুরের প্রায় সাড়ে ৭ হাজার এতিম শিশুকে প্রায় ১৮ কোট টাকা ভাতা দিচ্ছে উল্লেখ করে নব দম্পতিদের কর্মসংস্থানে সব ধরনের সহায়তায় পাশে দাড়াতে চেয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ স্থানীয় ( দিনাজপুর ৩) আসনের এমপি ইকবালুর রহিম এমপি। 

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo