• সমগ্র বাংলা

তেঁতুলিয়ায় প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষ

  • সমগ্র বাংলা
  • ২০ মে, ২০২২ ১২:১৯:২৯

ছবিঃ সিএনআই

এস কে দোয়েল,তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়): প্রথমবারের মতো তেঁতুলিয়ায় চাষ হচ্ছে ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধান। এ ধান চাষ করেছেন তিরনইহাট ইউপির অন্তর্গত ইসলামবাগ এলাকার  তরুণ কৃষক সাদেকুল ইসলাম সুষম। সে ওই গ্রামের ফেরদৌস কামালের পুত্র। ঢাকা কলেজ থেকে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর করে বর্তমানে বাবার জমির দেখাশোনা ও চাষাবাদ করছেন। ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে ঢাকার গাজীপুর থেকে এ কালোধানের বীজ সংগ্রহ করেন তিনি। ফলন ভাল এবং দামি হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরাও এ ধান চাষের উদ্যোগ নিচ্ছেন এর আগে চা বাগানে মাল্টা চাষ করে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। এই ধান দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন অনেকে।

ব্ল্যাক রাইস চাষ সম্পর্কে সাদেকুল ইসলাম সুষম জানান, করোনাকালে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে নিজেদের ৬০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলক ব্ল্যাক রাইস প্রজাতির ধানের চাষ করেন। চলতি সালের জানুয়ারি মাসের শেষে এই ধান রোপণ করেন। মাত্র ৩ মাসের মধ্যে প্রত্যেক গাছেই প্রচুর পরিমাণে ফলন ধরেছে। কিছুদিনের মধ্যেই মাড়াই শুরু হবে। ধানগুলো দেখতে যেমন কালো, চালও দেখতে তেমন কালো।  

সুষম আরও জানান, বাংলাদেশে দশ প্রকারের কালো ধান চাষ হয়। তবে আমি তিন প্রকারের ধান চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় ১৬/১৭ মণ ধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ধানের প্রত্যাশিত মূল্য ও চাহিদা হলে সামনের বছরে ব্ল্যাক রাইসের চাষ আরও বৃদ্ধি করবো। কেননা, এ ধান চাষে অতিরিক্ত ঝুঁকি এবং খরচ নেই। এটি সাধারণ ধানের মত চাষ হলেও অতিরিক্ত সার বা পানির প্রয়োজন হয় না। আলাদা পরিচর্যারও প্রয়োজন হয় না। অন্যান্য ধান থেকে এই ধান আলাদা হওয়ায় এর দাম বেশি। ২ বিঘা জমিতে লক্ষাধিক টাকার ধান বিক্রি করার স্বপ্ন দেখছেন এ তরুণ। এই ধানের উপকারিতার কথা শুনে অনেক কৃষকই বীজ সংগ্রহের জন্য তাকে বলে রেখেছেন।  

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, এ ধান সম্পর্কে আমরা জানতাম না। তবে শুনেছিলাম। ইসলামবাগ এলাকায় কালো ধান আবাদ হচ্ছে, আমরা এর চাষাবাদ ও উৎপাদন সম্পর্কে জানছি বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া সুষমের কাছ থেকে। সে এলাকার সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। এ কালো ধান দেখতে প্রতিদিন দর্শনার্থী ভিড় করছেন। ফলন ভাল হয়েছে, ধানটি দাম মিললে আমরাও এ ধান চাষের উদ্যোগ নিব।

উপজেলার কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান যে, ব্ল্যাকরাইস রাইস তথা কালো ধান তেঁতুলিয়া এলাকার জন্য প্রথম। ধানটি কালো চাল জাতীয় বিশেষ ধরণের প্রজাতি। চালের রঙ গাঢ় কালো হয়ে থাকে এবং সিদ্ধ হয়ে গেলে সাধারণত গাড় বেগুনি হয়ে যায় । এটাতে অ্যান্থোসায়ানিন উপাদান থাকায় যা অন্যান্য রঙের চালের তুলনায় ওজনে বেশি। আর উপকারিতা রয়েছে। ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ নানা রোগের উপকারিতা সমৃদ্ধ। যার কারণে ব্ল্যাক রাইসকে বর্তমানে পৃথিবীর নতুন সুপার ফুড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে  এ চালের বাজার মূল্য অনেক বেশি। ফলে ব্ল্যাক রাইস আবাদে কৃষক বেশি লাভবান হতে পারে।  এ ধানের চাল বেশি করে উৎপাদন করতে পারলে তা কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo