• অপরাধ ও দুর্নীতি

বগুড়ায় অটোভ্যান ছিনতাইয়ের জন্যে খুন, র‍্যাবের অভিযানে গ্রেফতার ৩

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ০৫ এপ্রিল, ২০২২ ২০:৪৮:২১

ছবিঃ সিএনআই

বগুড়া প্রতিনিধিঃ উদ্দেশ্য ছিল অটোভ্যান ছিনতাই করা কিন্তু চালক ফাহারুল ইসলাম বিজয় ঘনিষ্ট পরিচিত হওয়ায় তাকে খুন করে ছিনতাইকারীরা। পরে ভ্যানটি মাত্র ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে পালিয়ে যান তারা। হত্যায় জড়িত মূল হোতা মো. রিজুসহ তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানায় র‌্যাব-১২।  

সোমবার রাত পৌণে ১২ টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থেকে অভিযুক্ত রিজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২২ বছরের রিজু বগুড়ার সোনাতলার মাদারীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরের দিকে  আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। 

তারা হলেন, মাদারীপাড়া গ্রামের ২০ বছরের আশাদুল ইসলাম এবং গাবতলীর একবাড়িয়া গ্রামের ৪০ বছরের মো. শাবলু মিয়া সরকার। রিজু ভ্যানটি খণ্ড করে শাবলুর কাছে বিক্রি করেন। সেই ভ্যানের অংশগুলোও উদ্ধার হয়েছে।

নিহত ১৬ বছরের ফাহারুল ইসলাম বিজয় গাবতলী উপজেলার সোনারায় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ও ছয়ঘড়িয়া গ্রামের লিটন মিয়ার ছেলে। 

মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‌্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার সোহরাব হোসেন। 

তিনি জানান, রিজুর সঙ্গে বিজয়ের আগে থেকে পরিচয় ছিল। পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দা। সেই পরিচয় ধরে সাতদিন আগে ভ্যান ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন রিজু। ৩০ মার্চ দুপচাঁচিয়া ঘুরতে যাওয়ার জন্য বিজয়ের ভ্যান ভাড়া করেন রিজু। এ সময় তার সঙ্গে আরও একজন ছিল। বিজয় গরীব হওয়ায় বেশি টাকার লোভে ভাড়ায় যেতে রাজি হয়। বিকেল পর্যন্ত দুপচাঁচিয়ায় তারা ঘুরেছে। 

পরে সন্ধ্যার দিকে ফেরত আসার সময় কাহালু উপজেলার নারহট্ট এলাকায় পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে খুন করে বিজয়কে। রাস্তার ধারে খালে তার মরদেহ ফেলে দিয়ে ভ্যান নিয়ে চলে আসে রিজু ও তার সহযোগি। 

র‌্যাব কমান্ডার আরও জানান, রিজু নিজেই ছুরিকাঘাত করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে  স্বীকার করেছেন। এরপর আশাদুলের সহযোগিতায় অটোভ্যানটি শাবলুর কাছে কেটে খণ্ড করে বিক্রি করেন। সব মিলিয়ে ভ্যান বিক্রি করে মোট নয় হাজার টাকা পায় রিজু। টাকা নিয়ে রিজু চট্টগ্রামে গা ঢাকা দেন। 

সংবাদ সম্মেলনে সোহরাব হোসেন বলেন, তদন্তে আমরা কিছু সিসি টিভি ফুটেজ পেয়েছিলাম। সেগুলোতে ভ্যান চালক বিজয়ের সঙ্গে রিজুকে গাবতলীতে দেখা গেছে। পরবর্তীতে দুপচাঁচিয়ায় তাদের একসাথে দেখা গেছে। এ থেকে রিজুকে প্রথম সন্দেহ করা হয়।

পরে র‌্যাব-১২ এর সদর কোম্পানি এবং র‌্যাব-৭ এর সহযোগিতায় রিজুকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করে বগুড়া ক্যাম্প। রিজুর আরও একজন সঙ্গী রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা চলছে বলে জানান বগুড়া র‌্যাব কমান্ডার।

গ্রেপ্তার রিজুর বিরুদ্ধে মাদকসেবন ও এলাকায় কিছু অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা পায়নি র‌্যাব।

র‌্যাব কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাহালু থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বগুড়ার কাহালুর নারহট্ট ইউনিয়নের ভ্যাপড়া এলাকা ফাহারুল ইসলাম বিজয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় ‘এ সময় তার শরীরের পাঁজরে, কোমরের নিচে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। বেলা ১২ টার দিকে তার মরদেহ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে কাহালু থানার ওসি আমবার হোসেন বলেন, বিজয় নিহতের ঘটনায় তার বাবা লিটন মিয়া ১ এপ্রিল অজ্ঞাত আসামী উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেছিলেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo