নিজস্ব প্রতিনিধিঃ খাগড়াছড়িতে তথ্য অধিকার আইনে পানছড়ি উপজেলা খাদ্য অফিসের তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীনের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে খাগড়াছড়ি সদরের কলাবাগান এলাকার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। হেনস্তার স্বীকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি আব্দুর রউফ বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি পানছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কফিল উদ্দিনের কাছে তথ্য অধিকার আইনে চারটি তথ্য চাওয়া হয়। আবেদনে পানছড়ি উপজেলার বাঙালি গুচ্ছগ্রামের রেশনের বরাদ্দ, পরিবহন সংশ্লিষ্ট তথ্য, খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়। তথ্য প্রাপ্তির নির্দিষ্ট দিন অতিবাহিত হওয়ায় গত মঙ্গলবার পানছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে কেন তথ্য দেয়া হচ্ছে না তার কারণ জানতে চায়। এসব তথ্য দেয়া সম্ভব না বলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মৌখিক ভাবে জানান। পরবর্তীতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে এ বিষয়ে মুঠোফোনে কল করে জানতে চাওয়া হলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
আব্দুর রউফ আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য না পাওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসকে অবহিত করলে তিনি কল করে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীনকে এর কারণ জানতে চান এবং কেন দেয়া হবে না তা লিখিত ভাবে আবেদনকারী (আব্দুর রউফ) জানাতে বলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পানছড়ি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কফিল উদ্দিন লিখিত জবাব নেয়ার জন্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যান। এ সময় তথ্য না দেয়ার বিষয়টি কেন জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে তা বলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। এক পর্যায়ে উনি ডিসির (জেলা প্রশাসক) অধিনে চাকরি করেন না জানিয়ে আমাকে জুতা পেটা করে বের করে দেবেন বলে হেনস্তা করেন। এরপর আমার পোশাক (পাঞ্জাবি) ও শারীরিক অবয়ব (দাঁড়ি) নিয়েও মন্তব্য করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের কোনো মন্তব্য করেন না। তবে অভিযোগকারী সাংবাদিকের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।
সাংবাদিক আবদুর রউফ যখন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন তখন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি সমীর মল্লিক সেখানেই ছিলেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তিনি।
সাংবাদিক সমীর মল্লিক বলেন, ‘একজন পেশাদার সংবাদকর্মীর সাথে সরকারি কর্মকর্তার এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ দুঃখজনক। এটি মোটেও প্রত্যাশিত নয়।’
খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি জীতেন বড়ুয়া বলেন, ‘খাগড়াছড়ি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাংবাদিকদের সাথে যে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন তা মোটেও সমীচীন নয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন কর্মকর্তার এমন ধৃষ্টতা গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার জন্য হুমকি স্বরূপ। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাই, পাশাপাশি অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করি।
মন্তব্য ( ০)