• কূটনৈতিক সংবাদ

 বাংলাদেশের শ্রম খাতের পরিস্থিতি দেখতে ঢাকা আসছে ইইউ প্রতিনিধিদল

  • কূটনৈতিক সংবাদ
  • ১৩ মার্চ, ২০২২ ১২:৪৭:২৫

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশে শ্রম খাতের পরিস্থিতি দেখতে ঢাকা আসছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দল। আগামী সোমবার প্রতিনিধি দলটির ঢাকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

শ্রম খাতের পরিদর্শনে ইইউয়ের প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকার ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। গণমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘শ্রম খাতের জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা বা ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান অন লেবার সেক্টর নিয়ে আলোচনা করতে প্রতিনিধি দলটি সফর করবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বেসরকারি খাত এবং শ্রম সংগঠনগুলোর সঙ্গে এ সফরকালে বৈঠক করবেন তারা।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, করোনার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে সফরটি ঝুলে ছিল। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পথে রয়েছে বাংলাদেশ। নিয়ম অনুযায়ী এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বিদ্যমান জিএসপি সুবিধা থাকার কথা নয়। তবে এ সুবিধা আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাড়িয়েছে ইইউ। এর মধ্যে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে শ্রম পরিবেশ থেকে শুরু করে সার্বিক পরিস্থিতি সে অনুযায়ী উন্নতি করতে কাজ করছে বাংলাদেশ। ফলে বর্তমান শ্রম খাতের পরিস্থিতি উন্নয়নের মাধ্যমে সন্তোষজনক হলে জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়া সহজ হবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।

ফলে সফরটি বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বাংলাদেশ। আগামী ১৪ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকবে ইইউ প্রতিনিধি দলটি। এতে নেতৃত্ব দেবেন এমপ্লয়মেন্ট, সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ইনক্লুশন মহাপরিচালক জর্ডি কুরেল গোতোর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জাতিসঙ্ঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন (আইএলও) ও ইইউয়ের দেয়া মান অনুযায়ী শ্রম খাতের সার্বিক পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করছে শ্রম মন্ত্রণালয়। ২০২০ থেকে ২০২৫-এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে শিশুশ্রম বন্ধে জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া শ্রম খাতের জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা (২০২১-২০২৬), জোরপূর্বক শ্রম, কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও নির্যাতন বন্ধ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এ গুলোর আইন ও বিধি নিয়েও কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়।’

তবে এ খাতে বেশ কিছু বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এগুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। চ্যালেঞ্জগুলোতে সরকার আগের মতো অস্বীকার করা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। না হলে ভবিষ্যতে অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পরতে পারে।’

শ্রম খাতের সার্বিক অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানবাধিকার ও পরিবেশগত উন্নয়নের দিকটি মূল্যায়ন করবে প্রতিনিধি দলটি। ২০২১ সালের ১৯ জুলাই বাংলাদেশ ও ইইউয়ের মধ্যকার পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক ‘ডিপ্লোম্যাটিক কনসালটেশন’ অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর জিএসপি সুবিধা ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাড়ায় ইইউ। এটিকে কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে দেখছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর এখন থেকেই জিএসপি প্লাস সুবিধা অর্জনে কাজ করা শুরু করেছে বাংলাদেশ। তাজরীন ও রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের দৃশ্যমান সংস্কার ও উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো কিছু বিষয়ে পশ্চিমা ক্রেতাদের নারাজি রয়েছে। এর মধ্যে অন্যমত ট্রেড ইউনিয়ন। কাগজে কলমে এ সুবিধা দেওয়া থাকলেও মূলত ট্রেড ইউনিয়ন কার্যকর নয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ইউরোপে অবৈধ বাংলাদেশী ইস্যু, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র, শ্রম ইস্যুতে আগে থেকেই সোচ্চার ইইউ। একই সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে উচ্ছ্বাসও রয়েছে তাদের। ফলে বাংলাদেশকে আর উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে দেখতে রাজি নয় ইইউভুক্ত দেশগুলো। এখন বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বিবেচনা করে ইউরোপ।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo