• বিশেষ প্রতিবেদন

শীতের কাপড় কিনতে ফুটপাতে ক্রেতাদের ভিড়

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৯ জানুয়ারী, ২০২২ ১৬:৫৫:৩৭

ছবিঃ সিএনআই

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ হাঁড়কাঁপা শীত। ৭-এর ঘরে তাপমাত্রা। চলছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। শীতের প্রকোপে নাজেহাল পরিস্থিতিতে দেশের উত্তরের সীমান্ত জনপদ তেঁতুলিয়ার দেড়লাখের বেশি জনগোষ্ঠীর মানুষ। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে গরম কাঁপড় কিনতে হাটবাজারের ফুটপাতের দোকানগুলোর দিকে ছুটছে বিভিন্ন পেশাজীবির মানুষ। শীত নিবারণে একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফুটপাতের দোকানগুলো। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লেগে রয়েছে মানুষের ভিড়। তারা কেউ নিম্নবিত্ত, কেউ দিন মজুর আবার কেউ মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তও।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা নিকটবর্তী হওয়ায় দেশের উত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়ায় শীতের প্রকট বেশি হয়ে থাকে। গত ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারি মাসের ৪৬ দিনই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাতায় শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু অবস্থার শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের কম দামী কাপড়ের দোকানে।

শনিবার বিকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, তেঁতুলিয়া উপজেলার হাট-বাজারে বেড়েছে গরম কাপড়ের চাহিদা। শিশু ও বয়স্কদের কাপড় কেনার চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। তবে শপিংমলগুলোতে দাম চড়া হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ ঝুঁকছে ফুটপাতের দোকানগুলোতে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকানগুলোতে লেগে থাকে ক্রেতাদের ভিড়। ক্রেতার ভিড় বাড়ায় বিক্রেতারা বেশ খুশি।

বিক্রেতারা জানান, পুরাতন কাপড়ের মধ্যে জ্যাকেট, কোর্ট, প্যান্ট, সোয়েটার, মাফলার, টুপি, হাত মোজা ও পা মোজা বেশি বিক্রি হচ্ছে। কম মূল্যের নতুন কাপড়ও বিক্রি করেন কেউ কেউ। ৫০-১০০টাকা থেকে বেশি দামি কাপড়ও বিক্রি হচ্ছে। এসব কাপড় সাধারণত দিন মজুর, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, কৃষক, নির্মাণ শ্রমিক, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকরাই বেশি আসেন। এছাড়াও নিম্ন-মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চ বিত্তরাও এসে থাকেন।

চৌরাস্তা বাজারের ফুটপাত থেকে আধা-পুরোনো জ্যাকেট কিনছিলেন আব্দুর রাজ্জাক নামের এক ভ্যান চালক। তিনি জানান, শীতের কারণে আয়-রোজার কমে গেছে। তাই সাধ্যের মধ্যেই ৩শ টাকা দিয়ে পছন্দ করে জ্যাকেটটা কিনলাম। গত সপ্তাহে আমার স্ত্রী ও মেয়ের জন্য কিনেছি ফুটপাত থেকেই। আমাদের তো শপিংমলে যাওয়ার সাধ্য নাই।

ইজিবাইক চালক কামরুল ও কামাল জানান, মহামারী করোনাকালে এমনিতে ইনকাম কম। স্বপ্ন থাকলেও সাধ্যে কুলায় না যে, বড় বড় শপিংমল ও শোরুমে গিয়ে কাপড় কিনি। তাই আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর ভরসা ফুটপাতের দোকানগুলো। ফুটপাতের দোকানগুলোতেও কিছু কিছু সুন্দর নতুন কাপড়ও পাওয়া যায়। তাই পছন্দ করে কিনছি।

পাথর শ্রমিক পারভীন আক্তার ও সখিনা খাতুন জানান, ছেলেটার জন্য জ্যাকেট, টুপি ও হাতমোজা কিনলাম। ছেলেটা স্কুলে যায়, ওর তো ভাল কিছু পরতে ইচ্ছে করে। যা কিনলাম, তা অনেকটা নতুনের মতোই। সাধ থাকলেও সাধ্য থাকে না ভাই। আমরা গরিব মানুষ, দিন শেষে পাথর শ্রমে যা আসে, তা খেতেই চলে যায়।

কথা হয় ফুটপাতের কাপড় ব্যবসায়ী আক্তার হোসেনের সাথে। তিনি জানান, শীত মৌসুমে পুরাতন ও আধা-পুরোনা কাপড়ের ব্যবসাটা করি। ক্রেতাদের চাহিদা মতো কাপড় আনার চেষ্টা করছি। অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে এবার শীতের কাপড়ের চাহিদা বেশি। চেষ্টা করছি ক্রেতাদের প্রত্যাশার দামে কাপড় বেঁচতে। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে পুরাতন কাপড়ের বেল্টের দাম অনেক বেশি।  দোকানে উপচেপড়া ভিড় থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতাই ফিরে যাচ্ছেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo