• বিশেষ প্রতিবেদন

অল্প পুঁজিতে লাভজনক হওয়ায় কুল চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৭ জানুয়ারী, ২০২২ ১৫:৪৯:৪১

ছবিঃ সিএনআই

প্রতিনিধি,পাবনাঃ অল্প পুঁজিতে লাভ বেশি হওয়ায় পাবনার চাটমোহরে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কুল চাষ। মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষক। অল্প পুঁজিতে বিষমুক্তভাবে দুই জাতের কুল চাষে লাভবান হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে এর আবাদ।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ নিয়ে চাষীরা অনাবাদি জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল চাষ করছে। প্রতিটি বরই বাগানের ডালে ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে সু-স্বাধু মিষ্টি বরই। উন্নত জাতের বরই কৃষকের ভাগ্য উন্ন্য়নে নতুন চমক সৃষ্টি করছে। বাজার থেকে বরই সংগ্রহ ও বাজার জাতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। প্রাথমিক ভাবে বাজারদরও ভালো থাকায় বরই চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। স্বল্প সময়ে অধিক ফলন ও লাভবান হবার ফলেই বরই চাষে ঝুঁকছে চাষিরা।

চাটমোহর হরিপুর চড়ইকোল গ্রামের বাসিন্দা সফল কুল চাষী নাজমুল হক পাঠানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ২০০৮ সালে এলাকায় দুইজন কুল চাষীদের কুল চাষ করা দেখে আগ্রহ বাড়ে তার। এরপর ২০০৯ সালে প্রায় দুই বিঘা জমিতে কুল বরই চাষ শুরু করেন তিনি। প্রাথমিক ভাবে চাষ করে অনেক লাভবানও হন, কিন্তু পারিবারিক সমস্যা থাকায় পরে চাষাবাদ বন্ধ করে দেন নাজমুল হক পাঠান। নাজমুল হক পাঠান পুুনরায় ২০২০ সালে মে মাসে প্রায় ৪ বিঘা অনাবাদি জমিতে ৭৫০টি বল সুন্দরী ও নুরানী জাতের কুলের চারা রোপণ করেন। গত মৌসুমে ২২৬ মণ কুল উৎপাদন করে ৪ লাখ ১২ হাজার টাকা বিক্রি করেন তিনি। 

উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা লাভ করেন। চলতি মৌসুমে তার বাগানের প্রতিটি গাছে কুল বরই পরিপূর্ণ। ইতোমধ্যে ৪০ মণ কুল ১ লাখ ৪ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। তিনি আশা করছেন, উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে এ বছরেও অনেক টাকা লাভ থাকবে। তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে কুল চাষ করে আমার পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে এখন সুখেই দিন কাটছে তার।

উপজেলার মস্তালিপুর গ্রামের কৃষক বুরুজ আলী বলেন, বাড়ির ভিটায় প্রায় ১৫ বছর পূর্বে ২৫ টি কুলের চারা রোপণ করেছিলাম।

এখন ওই গাছগুলো থেকে প্রতি বছরে প্রায় লাখ টাকা আয় আসছে। কুল বরই বিক্রির টাকাই তার একমাত্র আয়ের উৎস বলে জানান তিনি। এই আয়ের টাকা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি জমিও কিনেছেন তিনি। কুল চাষ করে এখন স্বাবলম্বী বরুজ আলী। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, নাজমুল একজন সফল বরই চাষি। তার সাফল্য দেখে এই এলাকায় বরই চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। তিনি বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে কুল চাষ অধিক লাভজনক। এজন্য কৃষকদের কুল চাষে উদ্বুদ্ধকরণ ও পরামর্শ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। তার ব্লকে প্রায় ৩ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হচ্ছে। এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিসার এ.এ. মাসুম বিল্লাহ বলেন, কৃষিবান্ধব প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে জমি অনাবাদি না রাখার স্বার্থে কৃষি মন্ত্রণালয় পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় অত্র এলাকায় অনাবাদী জমিগুলো চাষের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ উপজেলায় বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ১৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হচ্ছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo