• শিশু সংবাদ

টাঙ্গাইলে উদ্বোধনের অপেক্ষায় নবনির্মিত দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু শিশু পার্ক

  • শিশু সংবাদ
  • ৩১ আগস্ট, ২০২১ ১৬:১৫:৩২

ছবিঃ সিএনআই

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার শিশুদের জন্য তেমন কোন বিনোদন কেন্দ্র ছিলনা। একটু বিনোদনের খোঁজে ছুটির দিনগুলোতে অভিভাবকরা ঘরবন্দি শিশুদের নিয়ে যেতেন শহরের কোন বিনোদন কেন্দ্রে। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুরা বিনোদন থেকে সম্পূর্ণভাবেই বঞ্চিত ছিল। অনেক প্রত্যাশার পর এবার দেলদুয়ারে নির্মাণ হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু শিশু পার্ক’। প্রায় পৌনে দুই একর জায়গা ঘিরে উপজেলা পরিষদের সামনেই তৈরি হচ্ছে পার্কটি। দ্রুত গতিতে চলছে এটির নির্মাণ কাজ। পার্কটির অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। খেলনাগুলোও সাজানো হচ্ছে। প্রধান সড়কের সাথে পার্কটি নির্মাণ হওয়ায় যাতায়াত সুবিধা পাবে সব দিকের মানুষ। উপজেলার সাধারণ মানুষের ধারণা শিশুদের এবার স্বস্তি মিলবে দৃষ্টিনন্দন এই শিশু পার্কে। টাঙ্গাইলের এসপি পার্ক বা ডিসি লেকের পরিবর্তে ঘর থেকে দু-পা বেড়িয়ে এ অঞ্চলের শিশুরা পাবে বিনোদন সুবিধা। ইনডোর বিনোদন ছেড়ে আউটডোরে অবসর বিনোদন পাবে এ উপজেলার বাসিন্দাসহ বিভিন্ন এলাকার শিশুরা এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের। ২০২০ সালের ৪ জুলাই টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম পার্কটির কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।

শিশু পার্কটি নির্মানে অনেকেরই অবদান রয়েছে। তবে সবশেষে দেলদুয়ার উপজেলার বর্তমান নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার পার্কটি বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। এর আগে মাটির মায়া খ্যাত এসিল্যান্ড দেলদুয়ার উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদত কবীর উপজেলাতে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড শুরু করেন। শিশুদের জন্য পরিকল্পনা করেন একটি শিশু পার্কের। তারই ধারাবাহিকতায় জায়গা নির্ধারণ ও বঙ্গবন্ধু শিশু পার্ক নামকরণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই অনুযায়ী ঢাকা থেকে স্থপতি অপুকে এনে একটি সুন্দর ডিজাইন করেন। আকস্মিকভাবে বদলি হওয়ায় আটকে যায় শিশু পার্কটির বাস্তবায়ন। পরবর্তীতে ইউএনও সাবিনা ইয়াসমিন (সুমী) ও নাদিরা আখতার পার্কটি বাস্তবায়নে তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। এবার বাস্তবে রূপ দিলেন বর্তমান ইউএনও মাহমুদা আক্তার। উপজেলার জন্য এমন উদ্যোগে প্রশংসিতও হয়েছেন এই নির্বাহী কর্মকর্তা। তবে পার্কটি বাস্তবায়নে টাঙ্গাইল -৬ (দেলদুয়ার-নাগরপুর) আসনের সাংসদ আহসানুল ইসলাম টিটু সার্বিক সহযোগিতা করছেন।

শিশু পার্কটি দৃষ্টিনন্দন করতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন ঢাকা ইন্টেরিয়রের প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি রুস্তম আলী অপু (স্থপতি অপু)। যার তৈরি ডিজাইনে পার্কটির সৌন্দর্য অনেকাংশে বেড়েছে। অপু উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের দেওজান গ্রামের বাসিন্দা। নিজের এলাকা এবং বঙ্গবন্ধুর নামে পার্কটি হওয়াতে অনেক সময় নিয়ে ডিজাইনটি করেছেন স্থপতি। গেটটির সৌন্দর্য আর প্রবেশ পথটি পার্কটিকে আরও দৃষ্টিনন্দন করেছে। তিনদিকের লেক পার্কটির সৌন্দর্যকে আরেক ধাপ বাড়িয়েছে। ভেতরের চলার পথ বেঁয়ে প্রতিটি ইভেন্টের কাছে যাওয়া আরও সহজ করেছে। ডিজাইনের পেছনে লম্বা সময় দিতে হয়েছে অপুকে। স্থপতি অপু জানান, এটা আমার নিজের এলাকা। এলাকা হিসেবে সাবেক ইউএনও শাহাদত কবীরের সাথে বিষয়টি নিয়ে আমার কথা হয়েছিল। পরিকল্পনা হয়েছিল কিভাবে পার্কটির সৌন্দর্য বাড়ানো যায়। সেই সূত্র ধরের বর্তমান ইউএনও সাথে কাজটি করার সুযোগ হয়। অনেক সময় নিয়ে কাজটি ফুঁটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আমার পুরো টিমটাকে কাজে লাগিয়েছি। পার্কটির ডিজাইন অবশ্যই দৃষ্টিনন্দন হবে। বঙ্গবন্ধুর নামের পার্কটিতে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে পেরেও আমি স্বাচ্ছন্দবোধ করছি। দেলদুয়ার উপজেলার ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম এহসানুল হক সুমন জানান, দেলদুয়ারে শিশুদের জন্য অধ্যবদি কোন পার্ক ছিলোনা, শিশু পার্কটিতে কোমলমতি শিশুরা বিনোদনের সুযোগ পাবে। এই উদ্যোগকে আমরা স্বাধুবাদ জানাই। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইমরান খান জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আমি পার্কটির বিষয়ে কাজ করছি। জায়গাটি উপজেলা পরিষদের (সরকারি) ছিল। এই জায়গাটার সুষ্ঠু ব্যবহার করে একটি উপযুক্ত পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এমন পার্ক শুধু দেলদুয়ারেই হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ উপজেলা প্রশাসনের পরিকল্পায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার জানান, ‘দেলদুয়ার উপজেলাতে তেমন কোন বিনোদন কেন্দ্র ছিল না। প্রয়োজনবোধ থেকেই পার্কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্ভবত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পার্কটির উদ্বোধন করা হবে। জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের যৌথ অর্থনৈতিক জোগান থেকে পার্কটি নির্মাণ হচ্ছে। উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মশিউর ইসলাম খান জানান, উপজেলা ও জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন অর্থায়নে শিশু পার্কটি নির্মাণ হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলীসহ আমাদের সমন্বয়ে স্থপতি অপু পার্কটির পূর্ণ ডিজাইন করেছেন। তবে পার্কটি দৃষ্টিনন্দন হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মারুফ জানান, শিশুদের মানসিক বিকাশে বিনোদন কেন্দ্রের প্রয়োজন আছে। দেলদুয়ারে কোন পার্ক ছিল না। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত পার্কটি অবশ্যই শিশুদের বিনোদনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও অবসর সময় কাটাতে পারবে

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo