• রাজনীতি
  • লিড নিউজ

যেভাবে ৬ বছরেই রাজনীতির উত্থান-পতন হেলেনার

  • রাজনীতি
  • লিড নিউজ
  • ৩০ জুলাই, ২০২১ ১৫:১৩:২৫

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ হেলেনা জাহাঙ্গীর। সময়ের আলোচিত নাম। সমালোচিতও। উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচিত পরিচালক। রাষ্ট্রের বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও (সিআইপি)। এটুকু পর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন রাজনীতিতে জড়িয়ে। ইতোমধ্যে তার ফেলে আসা সফলতার গল্প ছাপিয়ে রাজনীতির ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে। নানা নাটকীয়তার পর আটকও হয়েছেন।

হেলেনা আক্তার (হেলেনা জাহাঙ্গীর) ১৯৭২ সালের ২৯ আগস্ট কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবার চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পরিবেশে বড় হয়েছেন। হেলেনার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবা রাশিয়া চলে যান। মায়ের সঙ্গে গ্রামে চলে যান হেলেনা। ওই বছরই (১৯৯০) বিয়ের প্রস্তাব আসলে হয়ে যায় বিয়েও। স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের নামের ‘জাহাঙ্গীর’ যুক্ত হয় হেলেনার নামের সঙ্গে।

 

বিয়ের পর পড়াশোনা চালিয়ে মাস্টার্স পাস করেন। তবে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময়ই স্বামীর সহায়তায় উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের জীবন শুরু করেন। মিরপুরে একটি ফ্যাক্টরি করেন। যেটি এখনও আছে। সেখানেই তার জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন ও জয়যাত্রা আইপি টিভির কার‌্যালয়। এখন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এই হেলেনা।

১২টি পরিচয় বহন করেন হেলেনা

হেলেনা জাহাঙ্গীর বাবা ও স্বামীর সূত্রে বেশ অর্থসম্পদের মালিক। একইসঙ্গে নিজেও ব্যবসায়ী। এই নারী নিজেই ১২টি পরিচয় বহন করেন ও প্রকাশ করেন।

১. ভাইস প্রেসিডেন্ট, ন্যাশনাল শ্যুটার, ঢাকা রাইফেল ক্লাব
২. চেয়ারম্যান, জয়যাত্রা আইপি টেলিভিশন
৩. পরিচালক, এফবিসিসিআই
৪. উপস্থাপক, বাংলা টিভি
৫. অ্যাসিস্ট্যান্ট গভর্নর, রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট-৩২৮১, বাংলাদেশ
৬. স্বত্বাধিকারী, হেলেনা ফ্যাশন আইকন
৭. সম্পাদক ও প্রকাশক, পজিটিভ বাংলাদেশ
৮. পরিচালক, কমনওয়েলথ অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটস-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি
৯. উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন
১০. ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নিট কনসার্ন প্রিন্টিং লিমিটেড
১১. ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জয় অটো গার্মেন্টস লিমিটেড
১২. সম্পাদক ও প্রকাশক, জয়যাত্রা নিউজ পোর্টাল

 

যেভাবে জড়ান রাজনীতিতে

ব্যক্তিগত জীবনে নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকলেও ২০১৫ সাল থেকে রাজনীতিতে ঝুঁকে যান। ওই বছর অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়ে পরে মাঠ ছেড়ে দেন। এরপর ‘সরকারের কর্মকাণ্ড’ পছন্দ হওয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি ঝুঁকেন। বিভিন্ন মন্ত্রী ও নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান। ঘনিষ্ঠতাও হয়। যার সুবাদে প্রথমে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য হন। তবে এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও রিজেন্টকাণ্ডের হোতা শাহেদ করিমের সঙ্গে ছবি থাকায় বেশ সমালোচনার মুখেও পড়েন।

সর্বশেষ ‘আওয়ামী চাকরিজীবী লীগের’ সভাপতি পদে এসে বেশি সমালোচিত হন এই ব্যবসায়ী। সমালোচনার মুখে আওয়ামী লীগের দুটি পদই হারান ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর। এ নিয়ে প্রকাশ্য টকশোতে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকে তার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কথা বলতে দেখা গেছে। যার কারণে লাইভে এসে কান্নাও করেন হেলেনা।

গতকাল (২৯ জুলাই) রাতে তার গুলশানের বাসায় আকস্মিক অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে মদ, হরিণের চামড়া, বিদেশি মুদ্রা ও ক্যাসিনো সরঞ্জাম উদ্ধার হয়। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেলেনাকে আটকও করেছে র‌্যাব।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মেয়ে জেসিয়া আলম দাবি করেছেন, তার ভাই মদ পান করেন, তার মদের লাইসেন্স রয়েছে। পাশাপাশি ক্যাসিনোর চিপস ছিল, যেগুলো দিয়ে তারা সময় পার করতে খেলেন। ক্যাসিনো খেলার বোর্ড বা অন্যকোনো সরঞ্জাম ছিল না। হরিণের চামড়াটি তার ভাইয়ের বিয়ের সময় গিফট পেয়েছেন বলেও তার দাবি।

বিদেশি মুদ্রার বিষয়ে জেসিয়া বলেন, আমরা সচরাচর বিদেশে যাতায়াত করি। বেচে যাওয়া মুদ্রা তো ফেলে দিতে পারি না। সেগুলো রেখে দেই। ওই মুদ্রাগুলোই উদ্ধার দেখানো হয়েছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo