• বিশেষ প্রতিবেদন

মানিকগঞ্জে প্রশাসনের কঠোরতার মধ্যেও থেমে নেই মানুষের সমাগম

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৮ জুলাই, ২০২১ ১১:৩৮:৫৮

ছবিঃ সিএনআই

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মানিকগঞ্জের করোনা পরিস্থিতি’র দিন দিন অবনতি ঘটছে ।লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনের কঠোরতার মধ্যেও থেমে নেই লোকসমাগম।প্রতিনিয়তই মানুষ কারণে-অকারণে ঘর থেকে বের হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার হাটে-বাজারে, রাস্তা-ঘাটে ও চায়ের দোকানে মানুষের দেখা গেছে। এদের মধ্যে স্থাস্থ্য বিধির নেই কোন বালাই।

এদিকে মানুষকে ঘরমুখী করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান অাদালত পরিচালনা করে গত ২৪ ঘন্টায় ১৩টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১শ’১৪টি মামলায় ১শ’১৪জনকে ১লাখ ১১হাজার ৭শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই)বেলা ১১টার দিকে আরিচা বাসস্ট্যান্ড এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উথলী বাসস্ট্যান্ড এবং পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় লোকসমাগম দেখা গেছে।লোকজন ঢাকার দিকে যাওয়ার জন্য এসব জায়গায় ভিড় করছে। প্রতিদিন সকালে বাজার বেলার সময়ও মানুষের ভিড় দেখা যায়।এছাড়া প্রতিদিনের চেয়ে গত কয়েকদিনের তুলনায় ঢাকামুখী যাত্রীর ভিড় বেড়েছে।প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে যাত্রীরা গন্তব্যে যাচ্ছে।

এদিকে দিনের বেলায় প্রশাসনের কঠোর নজরদারী থাকায় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা রাতের বেলায়ে ফেরিতে নদী পার হয়ে আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে নেমে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক হয়ে ঢাকায় ফিরছেন। মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে নতুন করে ১৭০ জন শনাক্ত হয়েছেন। পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন আক্রান্ত ১৭০ জনের মধ্যে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ৩১ জন, সাটুরিয়া উপজেলার ৯ জন, দৌলতপুর উপজেলার ৭ জন, ঘিওরে ১৯ জন, শিবালয়ে ২১ জন, হরিরামপুরে ২৫ জন ও সিংগাইর উপজেলার ৫৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩৩৪ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে ২ হাজার ৮৪৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি রোগীরা বিভিন্ন হাসপাতালে ও নিজ বাড়িতে আইসোলশনে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলায় এ পর্যন্ত ৭৫ জন করোনায় মারা গেছেন। জেলা হাসপাতাল করোনা ইউনিট সুত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের ১০০ শয্যার করোনা ইউনিটে ২০৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে করেনা পজিটিভ হয়ে ৭৪ জন ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ১৩২ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন

ওযার্ডে ৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মানিকগঞ্জের মোশারফ হোসেন বলেন, পাবনা তার নানা শুরুর বাড়ি।তার নান শশুর খুব অসুস্থ্য তাই স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে নানা শশুরকে দেখার জন্য তার বাড়িতে যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন। পাবনার সোহাগী বলেন, তার মেয়ের কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসা শেষে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

মানিকগঞ্জের আব্দুর রহিম বলেন, তিনি ঢাকার উত্তরাতে সোয়েটার ফ্যক্টরিতে চাকুরি করেন।সাত দিনের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। করোনার কারণে সরকার সরকারী-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিলেও মালিকরা তা মানছে না। আমার ফ্যাক্টরির ম্যানেজার যাওয়ার জন্য মোবাইল করেছে। অফিসে না গেলে চাকুরি থাকবে না। যে কারণে বাধ্য হয়ে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছি।

জেলা সিভিল সার্জন আনোরুল আমিন আখন্দ সাংবাদিকদের বলেন, লকডাউনেও সাধারণ মানুষ বাইরে চলাচল করায় জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে। এছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা অনেক কম। সবাই সচেতন না হলে সংক্রমণের হার কমানো কঠিন হয়ে যাবে। জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ সাংবাদিকদের বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রটেরা প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।এছাড়াও তিন প্লাটুন সেনা ও দুই প্লাটুন বিজিবির সদস্যরা কাজ করছেন। স্বাস্থ্য বিধিসহ সরকারের নির্দেশনা না মানায় প্রতিদিনই মোবাইল কোর্ট করা হচ্ছে এবং জরিমানা করা হচ্ছে।আমাদের এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo