• বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ

বাবার চেহারার সাথে মিল না থাকায় সন্তানকে জবাই করে হত্যা!

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ
  • ২৬ জুলাই, ২০২১ ১৪:৩০:৪৯

ছবিঃ সিএনআই

হাসান জাবোদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ অন্যের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন সৌদি প্রবাসী বাদল মিয়া। সেই সন্দেহের বশে নিজের ৯ বছর বয়সি পুত্র সন্তানকে খুন করে বসলেন বাদল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের নদ্দাপাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে সৌদি প্রবাসী বাদল (৩০) আদালতের কাছে নিজ পুত্র সন্তানকে জবাই করে হত্যার বর্ণনা দেন। 

গত রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এ কথা স্বীকার করেছে বাদল। দুপুরে ওই আদালতের বিচারিক হাকিম আনোয়ার সাদাত এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এই তথ্য জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় কর্মরত উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহাঙ্গীর আলম। আদালতে দেওয়া বাদলের জবানবন্দি উদ্ধৃত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী মাসুদ ইবনে আনোয়ার জানান, গত ২৪ জুলাই শনিবার সকালে ঘাস কাটার কথা বলে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দুরের জমিতে তার ছেলে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্র সায়মনকে নিয়ে যায় বাদল। এ সময় তার ভাগিনা তাদের সঙ্গে ছিল। জমিতে পৌঁছার পর ভাগিনাকে কৌশলে বাড়িতে পাঠিয়ে ঘাস কাটার কাঁচি দিয়ে (স্থানীয়ভাবে বগা কাঁচি হিসেবে পরিচিত) শিশুপুত্র সায়মনকে জবাই করে হত্যা করে বাদল। এরপর তার মরদেহ জমিতে ফেলে রেখে বাড়িতে ফিরে এসে মায়া কান্না করে বাদল।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার পর শিশু সায়মনের মায়ের দায়ের করা মামলায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে বাদল মিয়াকে আটক করে।

পুলিশ পরিদর্শক মাসুদ জানান, বাদল আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। সে জানায়, ২০০৫ সালে চাকুরির সুবাদে সৌদি আরব চলে যান। ২০১২ সালে পাঁচ মাসের ছুটি নিয়ে এসে মামাতো বোন মিলিকে বিয়ে করে ফের সৌদি আরব চলে যান। সৌদিতে চলে যাওয়ার মাসখানেক পরে বাদল জানতে পারে তার স্ত্রী ৯ মাসের গর্ভবতী। মূলত এরপর থেকেই স্ত্রীর প্রতি সন্দেহের সৃষ্টি হয় তার। এরই মধ্যে স্ত্রীর গর্ভে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। সায়মন নামের ওই পুত্র সন্তান জন্ম হওয়ার পর বাদল একাধিকবার দেশে আসেন। এরপর তার স্ত্রীর গর্ভে আয়মন ও নাঈম নামে আরও দুটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তাদের বয়স যথাক্রমে ছয় ও চার।

বাদল আদালতকে জানায়, বর্তমানে দুবাই প্রবাসী বজলু মিয়া নামে স্থানীয় এক মাদ্রাসার হুজুরের সঙ্গে তার স্ত্রী মিলি'র বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। বাদল জানায়, জন্মের পর থেকেই সায়মন তার সন্তান নয় বলে স্ত্রী'র প্রতি সন্দেহ করতেন তিনি। তার সঙ্গে সায়মনের চেহারা-সুরতের মিল নেই বলেও মনে করেন তিনি। সেই সন্দেহের বশেই তিনি সায়মনকে খুন করেন বলে স্বীকার করেন।

উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে নদ্দাপাড়া গ্রামের একটি ধানি জমি থেকে শিশু সায়মনের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এই ঘটনায় শনিবার রাতে শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।  

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo