• প্রশাসন

শেরপুরে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ, ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড

  • প্রশাসন
  • ২৬ জুলাই, ২০২১ ১৩:০০:১০

ছবিঃ সিএনআই

শেরপুর প্রতিনিধিঃ শেরেপুর জেলার নকলা উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমানের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া ১৫ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী। অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে বিবাহ দেওয়া ও বিবাহ করানোর লক্ষে বাল্যবিবাহের কাজ পরিচালনা করার অপরাধে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে বর ও কনের বাবাকে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করেছে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান। ২৫ জুলাই রবিবার রাত ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নকলা ইউনিয়নের ছত্রকোনা এলাকায় কনের বাবার বাড়িতে গিয়ে ওই বিবাহ বন্ধ করার পরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে উভয় পরিবারের অভিভাবককে ২৫ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, নকলা ইউনিয়নের ছত্রকোনা গ্রামের মো. আব্দুল হাইয়ের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে পার্শবর্তী উরফা ইউনিয়নের লয়খা গ্রামের মো. ছাহের আলীর ছেলে মোবাইল ব্যবসায়ী মো. খলিলুর রহমানের সাথে বিয়ের আয়োজন চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান কনের বাবা মো. আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে গিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। তবে আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান বিয়ে বাড়িতে পৌঁছার আগেই বরযাত্রীদের খাওয়ানোসহ বিয়ের বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে বর ও কনের বাবাকে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার অর্থদন্ড করার পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ দিবেন না মর্মে উভয় পরিবারের অভিভাবকদের কাছে মুচলেকা নেওয়া হয়। ওই আদালত পরিচালনাকালে পুলিশ বিভাগে কর্মরত নকলা থানার বেশ কয়েকজন এসআই, এএসআই ও পুলিশ সদস্য, এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে আদালত পরিচালনায় সহায়তা করেছেন বলে ইউএনও জাহিদুর রহমান জানান।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাল্যবিবাহে কঠোর আইনী বাধা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যাকে ম্যানেজ করে বর-কনের নামে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে বা ভূয়া জন্মনিবন্ধন তৈরী করে এমন বিবাহের আয়োজন করা হয়। এলাকাবসীর অনেকে বলেন, এমন বিয়ের ক্ষেত্রে নিকাহ রেজিষ্ট্রার বা কাজীদের কোন প্রকার দোষ দেওয়ার সুযোগ থাকে না; কারন তাঁরা বর-কনের শিক্ষাগত সনদ বা জন্মনিবন্ধন সনদ দেখে সে অনুযায়ী বিবাহ রেজিষ্ট্রার করেন। ইউএনও জাহিদুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখে নকলাকে জেলার প্রথম বাল্যবিবাহ মুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

অতএব, এ উপজেলায় বাল্যবিবাহ কোনভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। নকলা উপজেলায় বাল্যবিবাহের কোন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট পরিবারের অভিভাবক, বর, আয়োজক ও নিকাহ রেজিষ্ট্রার বা কাজীদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ক্ষেত্রে আইনিভাবে কোন প্রকার আপোষ নেই। বাল্যবিবাহ নিরোধ ও বন্ধে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগসহ বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটির সংশ্লিষ্টরা সদা তৎপর রয়েছেন বলেও জানান ইউএনও জাহিদুর রহমান।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo