সাভার প্রতিনিধিঃ করোনা সংক্রমনের চলমান পরিস্থিতি সামাল দিতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দেশজুড়ে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। আশুলিয়ার মহাসড়কগুলো ফাঁকা থাকলেও পাড়া মহল্লায় ও অলিগলিতে চলছে অবাধে চলাফেরা এবং উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্য বিধি। আবার অনেক চায়ের ষ্টলে ক্যারাম খেলার আড্ডায় মেতে উঠেছে অনেকে। এদের মূখে নেই মাস্ক, মানছে না স্বাস্থ্য-বিধি। এভাবে চলতে থাকলে দিন যতই ঘনিয়ে আসবে ততই বিপুল সংক্রমণের ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে এমনটাই দাবি করেন সচেতন মহল।
সোমবার কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিন সকাল থেকে আশুলিয়ার বিভিন্ন মহাসড়ক ও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব দৃশ্য ছিল লক্ষ্যনীয়। কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিনে মহাসড়কগুলো ছিল অনেকটাই ফাঁকা। তবে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, রিকশা ও ভ্যান গাড়ি ছিল চোখে পড়ার মত। এই শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিকেল হলেই লোক সমাগম বেড়ে যায়। করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি থাকলেও কঠোর লকডাউন না মেনেই মানুষজন এদিকসেদিক ঘুরাঘুরি করছে বিনা কারণে। তবে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। কোন কোন স্থান থেকে তারা আবার ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ঘুরিয়ে দিচ্ছেন।
এদিকে, আশুলিয়ার বিভিন্ন বাজারে কঠোর লকডাউন অমান্য করে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে লোকজন কেনাকাটা করছেন। বাজার কমিটিকেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
সরেজমিনে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক, বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, এসব মহাসড়কে সকাল থেকেই কোন গণপরিবহন দেখা যায়নি। তবে কোন কোন স্থানে ছোট-বড় ব্যাক্তিগত গাড়ি এবং কিছু-কিছু মালবাহী গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। চলাচল করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স কিংবা খাদ্যপণ্যবাহী গাড়ি। মানুষের চলাচল স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকলেও মহাসড়কগুলো ছিল বরাবরের মত ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিকশা, অটোরিকশাসহ ব্যাটারি চালিত ভ্যান গাড়িও। তবে এসব গাড়িতে চলাচল করতে স্থানীয়দের দিতে হচ্ছে স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। সেই সাথে আঞ্চলিক বিভিন্ন সড়কগুলোতে ছোট-বড় যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক।
আশুলিয়ার দক্ষিণ গাজিরচট দুদু মার্কেট, আয়নাল মার্কেট, শেরআলী মার্কেট, সরকার মার্কেট, বাংলা বাজার ইটখোলা, নরসিংহপুর, ধলপুর, রশিদ মার্কেট, জিরানী বাজার, শ্রীপুর কাঁচা মালের আড়ৎ, ইকরা বাজার, শিমুলিয়া বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে কঠোর লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে লোকজন অবাধে চলাফেরা ও বাজার করছেন। অধিকাশংরই মুখে মাস্ক পরা না থাকলেও বাজারে আসা লোকজনদের ব্যাপারে কিংবা বাজার চলার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বাজার কমিটির।
এদিকে, আশুলিয়ার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় দোকানপাট, চায়ের দোকান ও খাবার হোটেলগুলো ছিল খোলা। চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। এছাড়া আশুলিয়ার ধামসোনা ইউপির কন্ডা এলাকার ব্রীজের পাড়, ধামসোনা বংশাই নদীর পাড়ে এবং শিমুলিয়া ইউপির রাঙ্গামাটি ব্রীজের পাড় ও ব্রীজ সংলগ্ন গাঙচিল জলকুটিরকে কেন্দ্র করে শত-শত মানুষের সমাগম হচ্ছে। লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই এসব স্থানে শত-শত মানুষের সমাগম হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি এসব এলাকায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা হয়নি।
তবে এসব স্থানে ঘুরতে আসা লোকজন বলছে, এসব এলাকায় প্রশাসনের লোকজন আসতে আসতে তারা চলেই যাবেন। আর এসব স্থানে মূলত প্রশাসনের লোকজন আসে না বললেই চলে।
অন্যদিকে, সকাল থেকে রাজধানীর প্রবেশদ্বার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক, বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কে লকডাউন সফল করতে তৎপর রয়েছেন পুলিশ। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কোনো যানবাহন রাজধানীতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এব্যাপারে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাজহারুল ইসলাম জানান, ‘লকডাউন না মেনে যেসব স্থানে লোকজন চলাচল করছে এরই মধ্যে আমরা সেসকল স্থানে অভিযান চালিয়েছি। এছাড়া যেসব স্থানে অভিযান করা হয়নি বা নতুন নতুন জায়গার খবর আসছে সেসব এলাকায় অভিযান করা হবে বলেও জানান তিনি।’
মন্তব্য ( ০)