• বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ

টাঙ্গাইলে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের দুর্নীতি, ঘুষ ছাড়া খামারিদের নাম উঠেনা প্রণোদনা‍র তালিকায়

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • লিড নিউজ
  • ১৪ জুলাই, ২০২১ ১৬:২৮:০৯

ছবিঃ সিএনআই

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের প্রণোদনা বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত খামারি মাঠকর্মীদের প্রদোনার টাকার জন্য ঘুষ দিতে রাজি হয়েছে, শুধু তাদেরকেই তালিকায় আনা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার কিছু অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ঘুষের বিনিময়ে গবাদি পশু নেই এমন ব্যক্তিকেও প্রনোদনার টাকা দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। তবে কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে এর কোনো সুর্নিদিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

জানা যায়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় মহামারি করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত গরু ও মুরগী খামারিদের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় খামারিদের প্রণোদনার টাকা দেওয়া হচ্ছে। ঘুষের বিনিময়ে এই তালিকায় একই পরিবারের দুই থেকে তিনজনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এমনকি অনিয়ম করে যাদের গবাদি পশু নেই, তাদেরকেও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হচ্ছে।

বিশেষ করে ধনবাড়ি, কালিহাতী, মধুপুর ও ঘাটাইল উপজেলায় বেশি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ঘুষের টাকা দিতে অস্বীকার করায় খামারিদের স্থানীয় প্রভাবশালীর নাম ভাঙিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। মাঠকর্মীদের ঘুষ দিলে মিলছে প্রণোদনা। টাকা না পেয়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। সরকারি প্রণোদনার টাকায় অনিয়মকারী মাঠকর্মী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে প্রণোদনা না পাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা। কালিহাতী উপজেলার আকুয়া গ্রামের শাহজালালের স্ত্রী সুমি বেগম জানান, গরু লালন-পালন করার কারণে বেশ কয়েক মাস আগে রুবেল আর মারুফ আসে আমার নামের লিস্ট নেওয়ার জন্য। পরে আমাকে বলে যে ১৫ হাজার টাকা পাবেন সেখান থেকে ৬ হাজার টাকা অফিস খরচ দিতে হবে টাকা পাবার পর। পরে যখন টাকা পেলাম তার পরে রুবেল ও মারুফ এসে টাকা নিয়ে গেছে ৬হাজার।

একই এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার কাছে রুবেল ও মারুফ ৪ হাজার টাকা দাবী করে। আমি বলি সরকার আমাকে টাকা দিছে আমি কোনোপ্রকার টাকা দিতে পারবোনা। পরে রুবেল ও মারুফ তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও প্রদান করে। কালিহাতী উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম জানান, আমার ছেলে মারুফ আর রুবেল লিস্ট করেছে আমি অসুস্থ থাকার কারণে এমনটা হতে পারে। দশকিয়া ইউনিয়নের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমন মিয়া জানান, আমি এরকম কাজ করি নাই।

তবে কিছু জায়গায় এমনটা হয়েছে আমি সকলের টাকা ফেরত দিব। এই কথা বলে তিনি তড়িঘড়ি করে চলে যায়। নারান্দিয়া ইউনিয়নের প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মামুন মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে আমি কোনপ্রকার টাকা নেইনি। আমি এ ধরণের কাজ করতেই পারি না। এসব মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। টাঙ্গাইল জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রথম ধাপে কোনো অনিয়ম হয়নি এটা জোড় দিয়ে বলতে পারি। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে কিছু অনিয়মের কথা শোনা যাচ্ছে। যতটুকু জানতে পেরেছি তা আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে অতি দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে। 

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo