কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া শহরের কাস্টম মোড়ে প্রকাশ্যে নিজ স্ত্রী ও শিশুসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৩ জুন) সকাল ১১টায় ম.আ. রহিম সড়কের(পিটিআই রোড) কাষ্টমস মোড়স্থ ডা: আজাদুর রহমানের নাজ ম্যানসনের ৪তলাভবনের নীচ তলার মার্কেটের মধ্যে গুলিবর্ষনের এই ঘটনা ঘটে। এঘটনায় জড়িত সন্দেহে সৌমেন কুমার রায় নামের ওই পুলিশ সদস্যকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সৌপর্দ
করেছে।
পুলিশের ধারণা নিহত আসমা ও শাকিলের মধ্যে কোন সম্পর্ক বা আর্থিক লেনদেনের ঘটনায় সৃষ্ট দ্বন্দে আসমার স্বামী আটক সৌমেন এই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: তাপস কুমার সরকার নিশ্চিত করে জানান, রবিবার বেলা ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ একজন মহিলা, একজন শিশু ও একজন পুরুষ ব্যক্তিদের হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরিক্ষা করে তিনজনকেই মৃত: পান।
নিহতরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামের বাসিন্দা মেজবার খানের ছেলে বিকাশ কর্মী শাকিল খান(২৮), নাথুরিয়া বাশগ্রামর বাসিন্দা আমির আলীর কণ্যা আসমা খাতুন(৩৪) এবং নিহত আসমার শিশু পূত্র রবিন(৭)। নিহত আসমার পূর্ব স্বামীর সন্তান শিশু রবিন। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রবিবার বেলা সাড়ে পৌনে ১১টার সময় কাষ্টম মোড়স্থ ডা: আজাদুর রহমানের ৪তলা ভবনের নীচ তলার মার্কেটের মধ্যে গুলি বর্ষণের শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে মার্কেটের মেঝেতে নারী ও পুরুষ এবং মার্কেটের সম্মুখে এক শিশুর লাশ পড়ে থাকতে দেখে। এসময় লোকজন জমায়েত দেখে অস্ত্রধারী ওই যুবক হাতের রিভরবার উঁচু করে গুলি করার ভয় দেখায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েক’শ এলাকাবাসী ইট পাটকেল নিয়ে ওই যুবকের উপর হামলা করতে উদ্ধ্যত হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওই যুবক হাতের অস্ত্র ফেলে দেয়। পরে লোকটিকে মার্কেটের মধ্যে আটকে রেখে এলাকাবাসী পুলিশে সংবাদ দেয়।
রাস্তার বিপরীত পাশের চা দোকানী বলেন, হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি মার্কেটের ভিতর থেকে একটা ছোট্ট শিশু ছুটে বের হয়ে আসলো, ওর পিছনে পিস্তল ধরা লোকটি ছুটে এসে শিশুটিকে ধরে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করলো। তখনই শিশুটি মাটিতে পড়ে যায়। প্রকাশ্যে শিশুটিকে যেভাবে গুলি করলো তাতে মনে হলো কতই না রাগ বাচ্চাটার উপর।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাব্বিরুল ইসলাম জানান, রবিবার শহরের কাষ্টম মোড়ের মার্কেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বিকাশ কর্মী শাকিলসহ মা আসমা ও শিশু রবিন হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে আটক পুলিশ সদস্য এএসআই সৌমেন কুমার মাগুড়ার বাসিন্দা এবং বর্তমানে খুলনা ফুলতলা থানায় কর্মরত বলে জানতে পেরেছি। জিজ্ঞাসাবাদে সৌমেন নিহত আসমাকে তার স্ত্রী বলে দাবি করেছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে সৌমেনের স্ত্র্রী আসমার সাথে বিকাশকর্মী শাকিলের কোন সম্পর্ক বা আর্থিক লেনদেনের ঝামেলা থাকতে পারে। অথবা ডিভোর্সী আসমা সৌমেন ও শাকিলের মধ্যে ত্রি-মুখী কোন সম্পর্কের দ্বন্দে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। আমরা সবগুলি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি।
মন্তব্য ( ০)