• সমগ্র বাংলা

কুষ্টিয়ায় টাকা ছাড়াই পছন্দের ‘ঈদ পোশাক’

  • সমগ্র বাংলা
  • ০৮ মে, ২০২১ ০০:১৮:০৭

ছবিঃ সিএনআই

নিউজ ডেস্কঃ উৎসব প্রেমী বাঙালি। আর নতুন পোশাক ছাড়া যেন জমেই না বাঙালির উৎসব। সেই উৎসব যদি হয় ঈদ। তাহলে তো নতুন পোশাক ছাড়া ঈদের আনন্দ কল্পনায় করা যায় না।

ঈদকে সামনে রেখে ধনী থেকে গরিব বাঙালির প্রতিটি ঘরে ঘরে কেনাকাটার ধুম লেগে যায়। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিরা স্বাদ ও সাধ্যের মধ্যে কিনে প্রতিটি সদস্যের নতুন পোশাক। কিন্তু মহামারি করোনায় ঈদের পোশাক কিনতে ধনীদের তেমন অসুবিধা না হলেও বিপাকে গরিব ও ছিন্নমূল মানুষেরা। 

করোনায় পর্যাপ্ত কাজ ও অর্থ না থাকায় অনিশ্চিত ঈদের নতুন পোশাক কেনা। তাদের কাছে অনেকটায় অনিশ্চিত ঈদের আনন্দ।

সে কারণেই খেটে খাওয়া, দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এক ভিন্নরকম দোকানের খোলা হয়েছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায়। দোকানে শিশু থেকে সব বয়সী মানুষই আসছেন, ঘুরেফিরে পছন্দের ঈদ পোশাক দেখছেন এবং অবশেষে টাকা ছাড়াই পছন্দের পোশাক নিয়ে খুশিতে বাড়ি ফিরছেন।

ঈদকে সামনে এমন ভিন্নরকম দোকান খুলেছেন এক তরুণ ব্যবসায়ী। কুমারখালী গণমোড় সংলগ্ন কৃষি ব্যাংকের নিচে মোবারক মার্কেটে অবস্থিত। আর দোকানটির নাম দেওয়া হয়েছে 'ঈদ আনন্দ, মানুষের প্রতি ভালবাসা'। 

দোকানে শিশু থেকে সব বয়সী পাঁচশত পুরুষ মানুষের জন্য নতুন জামা, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি সহ ইত্যাদি পোশাক রাখা হয়েছে। এখান থেকে একজন ব্যক্তি পছন্দ মতো মাত্র একটি পোশাক টাকা ছাড়াই কিনতে পারবেন। পোশাকগুলো দেওয়া হচ্ছে রাফা পাঞ্জাবী'র সহযোগিতায়।

শুক্রবার (০৭ মে) বিকেলে এ দোকানটির শুভ উদ্বোধন করেন ব্যবসায়ী তিয়াসের মা সুরাইয়া পারভীন।

জানা যায়, করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে অনেকে, দু-বেলা দু’মুঠো ভাতের যোগান দেওয়াটাও তাদের কাছে কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ঈদে নতুন পোশাক কেনাটা দুঃস্বপ্নের মতো। কিন্তু নতুন পোশাক ছাড়া ঈদ জমে না। এমন ধারণা থেকেই 'ঈদ আনন্দ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা' নামে ভিন্নধর্মী দোকান খুলেছেন তরুণ ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী তিয়াস।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দোকানে আগতদের বিনয়ের সঙ্গে স্বাগতম জানাচ্ছে কিছু স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থী। এরপর আগতরা দোকানে থাকা ঈদের পাঞ্জাবী, টি-শার্ট, গেঞ্জি ইত্যাদি ঘুরেফিরে দেখছেন। পছন্দ হলেই স্বেচ্ছাসেবীরা প্যাকেট করে দিচ্ছেন।

স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তেমন কাজও নেই। তাই ভাল কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন তারা।

ভিন্নরকম এমন দোকানের উদ্যোক্তা শাকিল আহমেদ তিয়াস বলেন, নতুন পোশাক ছাড়া তো ঈদের আনন্দ হয় না। করোনায় কর্মহীন মানুষের জন্য পোশাক কেনা সম্ভব নয়। এছাড়াও মানুষ তার নিজ পছন্দের পোশাক পড়তে ভালোবাসে। তাই ভিন্নরকম এমন আয়োজন। মানুষ দোকানে আসবে, টাকা ছাড়াই এখান থেকে পছন্দের পোশাক কিনে বাড়ি ফিরবে। 

তিনি আরও বলেন, বিত্তবানদের উচিত ছিন্নমূল মানুষের জন্য কিছু একটা করা।

এ বিষয়ে তিয়াসের মা সুরাইয়া পারভীন বলেন, আমার ছেলে সব সময় মানুষের কথা ভাবে। মানুষের জন্য চিন্তা করে। আমার ওর (ছেলের) কার্যক্রমগুলো খুব ভালো লাগে।

এমন ভিন্ন দোকান থেকে টাকা ছাড়াই পোশাক কেনা কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনায় কাজ নেই। নতুন পোশাক কেনার টাকা নেই। এখান থেকে পছন্দ করে পোশাক নিয়েছি। নতুন পোশাক পেয়ে খুব খুশি খুশি লাগছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo