• অপরাধ ও দুর্নীতি
  • লিড নিউজ

প্রেমের প্রস্তাব দেয়ায় যুবকের ফুসফুস-কিডনিতে ছুরিকাঘাত! 

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • লিড নিউজ
  • ০৪ মে, ২০২১ ১৬:৩৮:২২

ছবিঃ সিএনআই

নুরুল আমিন হাসান: রাজধানীর উত্তরখানের দোবাদিয়া এলাকায় সহপাঠী ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক শাকিল (১৮) নামের যুবকে এলাপাথারী ছুরিঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শাকিলের কিডনি ও ফুসফুস ছিদ্র হয়ে গেছে। তার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কাজনক।

ছুরিকাঘাতের ঘটনায় কিশোরগ্যাং গ্রুপের পাঁচ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শ্রাবণ (১৯), আশিকুর রহমান হৃদয় (১৫), রবিউল আওয়াল সিয়াম (১৬), মো. রোমান (১৫) ও আতিকু রহমান (২০)। গ্রেপ্তারকৃতরা বর্তমানে দোবাদিয়া ও সাইনবোর্ডসহ আশে পাশের এলাকায় বসবাস করেন। গ্রেপ্তারকৃতদেরকে আজ (মঙ্গলবার) আদালতে পাঠানো হয়েছে।

দোবাদিয়া বাজারের মা আমেনা স্কুলের সামনের মাঠে রোববার (০২ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে, পরে টঙ্গীর আহসান উল্লাহ্ সরকারী হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে চিকিৎসার জন্য উত্তরার একটি বেসরকারী হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গুরুতর আহত ওই যুবক হলেন গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার হিরচন্ডি গ্রামের মো. আব্দুস ছালামের ছেলে। বর্তমানে তিনি উত্তরখানের দোবাদিয়া বাজারের সামছুল হাজীর বাড়ির ভাড়াটিয়ে।

উত্তরখান থানার উপ-পরির্দক (এসআই) মুশফিবুর রহমান বলেন, কিশোরকে ছুরকাঘাতের ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শাকিলের আব্দুস সালাম বাদী হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বেআইনী জনতাবদ্ধ হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে সাধারণ ও গুরুতর রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগে একটি মামলা করেন।

তিনি আরো বলেন, ওই যুবককে ছুরিকাঘাতের পর সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উত্তরখানের বিভিন্ন এলকায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত পাঁজন আসামীকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা কিশোর‌ গ্যাং গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সময় দোবাদিয়া এলাকায় জনমনে আতংক করার জন্য উশৃঙ্খলার সৃষ্টি করতো। তাছাড়াও গ্রুপে গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বখাটেপনা করতো।

এসআই মুশফিক বলেন, গ্রেপ্তারের পর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সেই সাথে কিশোরগ্যাং কালচারের সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেও তারা জানিয়েছে।

উত্তরখান থানায় শাকিলের বাবার করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শাকিল ও আনিছুর রহমান মাষ্টারের মেয়ে শান্তা দোবাদিয়া এলাকায় একত্রে কোচিং করতো। সেই সুবাদে শান্তার সাথে শাকিল কথাবার্তা বলিত। বিষয়টি শান্তার ভাই আশিকুর রহমান হৃদয় জানতে পেরে শাকিলকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিত। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার রাত ৮টার দিকে হৃদয় শাকিলকে তার মোবাইলের দোকান থেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে বলে ডেকে নিয়ে যায়। ওই সময় দোকানে থাকা নিবিড় ও ময়নুল শাকিলের সাথে যায়। পরে তারা খেলার মাঠে যাওয়া মাত্রই হৃদয় শাকিলের কলার চেপে ধরে। তখন পূর্বে থেকে ‍উৎপেতে থাকা কয়েকজন তাকে মারধরও করে। পরে শ্রাবণ তার পকেট থেকে ছুরি বের করে ফুসফুস ও কিডনিতে দুটি ছুরিকাঘাত করে।  

এ বিষয়ে উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মো. আব্দুল মজিদ বলেন, দোবাদিয়া এলাকার শাকিল নামের এক যুবক শান্তা ইসলাম নামের আরেক যুবতী এক সাথেই পড়াশোনা করে। সেই সুবাদে শাকিলের শান্তাকে পছন্দ করে। এরই প্রেক্ষিতে শাকিল শান্তাকে ‘আই লাভ ইউ’ লিখে মেজে দেয়। পরে শান্তাকেও একই মেসেজ দিতে বলে। পরে শান্তাও ‘আই লাভ ইউ’ লিখে শাকিলকে মেজেস পাঠায়।

ওসি বলেন, মেসেজ পাঠানোর পর শান্তা তার ছোট ভাইকে ডেকে বলেন- ‘শাকিলকে গিয়ে বলবি- ‘শাকিল যদি আমাকে ভালোবাসে তাহলে সিগারেট খাওয়া বাদ দিতে হবে। ফাজলামু করা চলবে না। চিটিং করা চলবে না।’ পরে শান্তার ছোট ভাই গিয়ে তাকে এ কথা জানায়। কিন্তু বিষয়টি শান্তার বাবা আনিছুর রহমান জানতে পারে। আনিছুর রহমান পেশায় প্রাইভেট শিক্ষক। পরে তিনি তার ছাত্রদেরকে বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, আমর মেয়েকে শাকিল উত্যক্ত করছে, কিন্তু তোমরা কেউ কিছুই বলছো না, প্রতিবাদ করছো না কেন? এর পরপরই তারা উত্তেজিত হয়ে এ ঘটনায় ঘটনায়।

ওসি মজিদ চিকিৎসকের উদৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘ছুরিকাঘাতে আহত শাকিলের অবস্থা গুরুতর। ছুরির আঘাতে তার একটি কিডনি ও একটি ফুসফুস হয়ে গেছে। ডাক্তাররা বলছেন- ‘তিনি যেকোন সময় মারা যাবেন।’’ 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo