• শিক্ষা

করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ফ্রি বাজার

  • শিক্ষা
  • ০২ মে, ২০২১ ১৫:৪৬:৪৩

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ করোনা ভাইরাস পৃথিবীতে আঘাত হানার পর থেকে সারা বিশ্বের মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত প্রায়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন-জীবিকা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে করে মানুষের অসহায়ত্বের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে। করোনার দুঃসময়ে মানুষের সীমাহীন দুঃখ গল্পের মাঝে একটুখানি প্রশান্তির পরশ দিতে কাজ করে যাচ্ছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী।

করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে মানুষকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি। এখন পর্যন্ত মেহেরপুর জেলায় ৮৫ দিনের মতো ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র সাব্বির আহমেদ। কাজ করতে গিয়ে তিনি শুনেছেন মানুষের বিভিন্ন কথা, পেয়েছেন পাগলা উপাধি।

অনেকে তাকে সাব্বির পাগলা উপাধি দিয়েছেন। তার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, করোনাকালীন সময়ে সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল আর তখন তিনি করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে অসহায় মানুষের পাশে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, জীবাণুনাশক ব্লিচিং পাউডার স্প্রে ও বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছেন।

করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ে ৭৫ দিনে কাজ সমাপ্ত করলেও দ্বিতীয় ঢেউয়ে মানুষের অসহায়ত্ব দেখে বসে থাকতে পারেননি তিনি। পুনরায় গতমাসের ২১ এপ্রিল (বুধবার) থেকে তার নিজ বাসভূমি মেহেরপুরের সাধারণ মানুষের মাঝে ফ্রি বাজার চালু করেছেন। চলমান এই ফ্রি বাজারের পাশাপাশি অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে ইদ উপহার সামগ্রী কেনাকাটার কাজ শুরু করেছেন বলে জানান তিনি। তার ফ্রি বাজারের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকমের শাক-সবজি, মাছ, ফল সহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। প্রতিদিন প্রায় কয়েক শতাধিক মানুষ এখান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় ফ্রি বাজার নিয়ে যায়। তবে মাস্ক ছাড়া কাউকে ফ্রি বাজার দেওয়া হয় না বলে জানিয়েছেন তিনি। মেহেরপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে এই ফ্রি বাজারটি বসে। এসময় ফ্রি বাজারের পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উৎসাহ প্রদান করা হয় বলে জানা গেছে।

মহামারীর প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বান্ধবদের সহযোগিতায় ৭৫ দিনের মতো কাজ চালিয়েছেন তিনি। করোনার প্রাথমিক সময়ে টিউশনির টাকা দিয়ে শুরু করা তার উদ্যোগের মধ্যে ছিল মানবতার দেয়ালের আদলে খাদ্য সামগ্রীর ফ্রি দোকান, বাড়ি বাড়ি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ। এরপর সকলের সহযোগিতায় ফ্রি বাজার, প্রয়োজনীয় ঔষধ, ইদ উপহার, ইফতার সামগ্রী, মাস্ক বিতরণ, সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ এবং জীবাণুনাশক ব্লিচিং পাউডার স্প্রে সহ আরও নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখন ফ্রি বাজার কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে কাজ শুরু করেছেন। পাশাপাশি ইদ উপহার সামগ্রী সহ অন্যান্য কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। বাংলাদেশের সচেতন নাগরিকদের সহযোগিতায় এবং রাব্বি, তানভীর, নাঈম, আকাশ, পিয়াস, রুমেলসহ প্রমুখ স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে প্রতিদিন অসহায় মানুষের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

এ ব্যাপারে সাব্বির আহমেদ জানান, মহামারীর এই সময়টি একরকম অঘোষিত যুদ্ধের ময়দান। যেখানে শত্রু আমাদের চক্ষু দৃষ্টির আড়ালে কিন্তু সমস্যাগুলো সকলের সামনে প্রতীয়মান। সমস্যার সমাধানে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন, নাহলে কখনোই করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবস্থা থেকে আমরা উন্নতি লাভ করতে সক্ষম হবো না। আমাদের কার্যক্রমগুলো সম্পূর্ণই মানুষের সহযোগিতার উপরে নির্ভরশীল। তাই সকলকে মানুষের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। সকলে মিলে কাজ করলে একদিন স্বপ্নের সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo