চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা প্রধান সড়ক থেকে হিয়ালদহ পর্যন্ত মাত্র এক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন ৬টি গ্রামের সাধারণ মানুষ। গ্রামীণ এ সড়কটিতে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির পানি জমে রাস্তায় শুধুই কাদা আর কাদা। যানবাহন চলাচল দূরের কথা, হেঁটে চলাচল করা দুরুহ হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী বছরের পর বছর জনপ্রতিনিধিদের কাছে রাস্তা পাকাকরণের দাবি জানিয়ে এলেও আশ্বাস ছাড়া কিছু মেলেনি। এই এক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা এলাকার মানুষের কাছে এখন ‘গলার কাঁটা’!
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, গুনাইগাছা থেকে হিয়ালদহ গ্রামে যাতায়াতের সবচেয়ে সহজ ও প্রধান এই সড়ক দিয়ে শুধু হিয়ালদহ গ্রামের লোক নয়, ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন বৃ-গুয়াখড়া, দড়িপাড়া, শালিকা, নতুনপাড়া, শিবাখালিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। একসময় পুরো রাস্তাই কাঁচা ছিল। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে উপজেলা রাজস্ব উন্নয়ন তহবিল এবং পরে জেলা পরিষদের তহবিল থেকে বড়শালিকা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা এইচবিপি করণ করা হয়। কিন্তু কাঁচা রয়ে যায় বাকি অংশ।
বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ওই রাস্তা কাদায় পরিপূর্ণ থাকে। প্রবেশ করতে পারে না কোনো ধরণের যানবাহন। পায়ে হেঁটে চলাচল করা ছাড়া কোনো উপায় থাকেনা। বিশেষ করে অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে আনা-নেয়া করতে ব্যাপক বেগ পেতে হয়। শুধু রোগী নয়, রাস্তার কারণে আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের গরু ও পোলট্রি মুরগির খামার মালিকরা দুধ এবং ডিম গ্রামে বসে ফরিয়াদের কাছে কম দামে বিক্রি করে থাকেন। এত আর্থিকভাবে লোকসান গুনছেন তারা। চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে চলাচলকারী প্রায় বিশ হাজারেরও অধিক মানুষকে- এমন কথাই জানালেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা।
হিয়ালদহ গ্রামের আমিন উদ্দিন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, কাদার মধ্যে দিয়ে অনেক কষ্টে যাতায়াত করতে হয় সবাইকে। অসুস্থ রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া আর চাঁদের দেশে যাওয়া সমান কথা! আমাদের এমন দুর্ভোগ দেখেও জনপ্রতিনিধিদের হুশ ফেরেনা। এই রাস্তা এখন আমাদের গলার কাঁটা। সন্তোষ মোল্লা নামের এক ভ্যান চালক বলেন, আর কতো কষ্ট করবো? ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। বৃষ্টি হলে এই রাস্তার লোকজন যাতায়াত করে না। তাই ভাড়াও পাওয়া যায় না। আমাদের কষ্ট কেউ বোঝে না। মঞ্জুয়ারা খাতুন নামে এক নারী দৈনিক তৃতীয় মাত্রাকে বলেন, ভোটের আগে নেতারা রাস্তা করে দেয়ার কথা বলে। ভোট তো আমরা ঠিকই দেই। কিন্তু রাস্তা আর হয় না।
গুনাইগাছা ইনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, দুই ধাপে ওই রাস্তার এইচবিপি করণ করা হয়েছে। তবে বাকি এক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার জন্য সত্যিই ওই এলাকার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তবে বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করার জন্য চেষ্টা করছি। আশা করছি আগামী ভোটের আগেই রাস্তাটি নির্মাণ সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী রাজু আহমেদ বলেন, গ্রামীণ ওই সড়কটি এলজিইডির গেজেটভুক্ত নয়। যে কারণে এভাবে পড়ে আছে। তবে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে রাস্তাটি করা যেতে পারে। তবে এর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে।
মন্তব্য ( ০)