• স্বাস্থ্য

বেলস পালসি বা মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া

  • স্বাস্থ্য
  • ২০ নভেম্বর, ২০২০ ১৮:১৭:০৫

প্রতীকী ছবি

স্বাস্থ্য ডেস্কঃ অনেক সময় বিশেষ করে শীতের সময় বেশি দেখা যায় সকালে ঘুম থেকে উঠার পর মুখের এক পার্শ্ব বেঁকে যাচ্ছে, চোখ বুঝতে পারে না, দাঁত দেখাতে বললে দেখা যাবে মুখ বেঁকে যায়। এর অন্যতম একটি কারণ বেলস পালসি/ফেসিয়াল পালসি।

বেলস/ফেসিয়াল পালসি:

সপ্তম ক্রেনিয়াল নার্ভ যেকোনো কারণে আক্রান্ত হওয়ায় ফেসিয়াল মাসল এর একপাশে দুর্বল অথবা প্যারালাইসিস হয়ে যায়। 

কারণ:

অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকৃত কারণ জানা নেই। তবে বেশ কিছু কারণে এটি হতে পারে বলে মনে করা হয়-

১. হার্পিস ভাইরাস।
২. চিকেন পক্স এবং সিঙ্গেলস ভাইরাস।
৩. অনেক ঠাণ্ডা লাগলে।
৪. এপসটিনবার ভাইরাস।
৫. ইনফ্লুয়েঞ্জা, সাইটোমেগালো এবং মাম্পস ভাইরাস।
৬.টিউমার এর কারণে।
৭. কোন আঘাতজনিত কারণে।

কাদের ঝুঁকি বেশি থাকে:
১. মাইগ্রেইন রোগী।
২. মুখমণ্ডল এবং হাত, পা দুর্বল যাদের।
৩. ১৫-৬০ বছর বয়সী লোক। তবে যেকোনো বয়সেই হতে পারে। নারীদের বেশি হয়।
৪. ডায়াবেটিস রোগী।
৫. রেস্পিরেটরি সমস্যা যেসব রোগীর।
৬. গর্ভবতী মা; বিশেষ করে ২৯-৪০ সপ্তাহের গর্ভবতী।
৭. কানের ইনফেকশন  রোগীর।

লক্ষণ:

১.আক্রান্ত রোগীর মুখ এক দিকে বেঁকে যায়।
২. আক্রান্ত পাশের চোখ বন্ধ হয় না।
৩. দাঁত দেখাতে গেলে মুখ বেঁকে যায়।
৪. কোন কিছু খেতে গেলে খাবার একপাশে চলে যায়।
৫. খাবারের স্বাদ কমে যায় বা অনুভব হয় না।
৬. খাবার গিলতে কষ্ট হয়।
৭. কপাল ভাঁজ করতে পারে না।
৮. হঠাৎ উচ্চ আওয়াজ শুনতে পাওয়া।

ডায়াগনোসিস:
১. ফিজিক্যাল এক্সামিনেশন।
২. ল্যাবরেটরি ডায়াগনোসিস: নার্ভ কনডাকশন ভেলোসিটি, সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি।

চিকিৎসা:

উপরের এই লক্ষণগুলো দেখলে একজন গ্রাজুয়েট ফিজিওথেরাপিস্ট, নিউরোলজিস্ট শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিভাইরাস এবং স্টেরয়েড ঔষধ খেতে হবে। চোখকে প্যাড দ্বারা ঢেকে রাখতে হবে। নিউরোলজিস্ট দেখালেও তারপর পুনরায় একজন ফিজিওথেরাপিস্টকে দেখান।

ফিজিওথেরাপি (প্রধান চিকিৎসা): অধিকাংশ রোগী নিয়মিত ফিজিওথেরাপি নেওয়ার পরে ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে অনেকটা উন্নতি হয়। কিছু কিছু রোগীর কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। একজন এক্সপার্ট ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে বিভিন্ন ফিজিওথেরাপি ইন্টারভেনশন দ্বারা চিকিৎসা করে থাকেন। এর মাধ্যমে রোগীর মাসল উইকনেস বা প্যারালাইসিস থেকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনেন। তবে অনভিজ্ঞ কেউ এক্সারসাইজ বা ইলেক্ট্রো থেরাপি কিছু যন্ত্রপাতি দ্বারা চিকিৎসা দিলে এতে রোগীর সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

লেখক: সাইফুল ইসলাম

বিএসপিটি চূড়ান্ত বর্ষ, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পূনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল)

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo