নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘আমি মোটেই মনে করি না, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন একটা অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে।’ অবশ্য সেনাবাহিনী মাঠে নামলে, পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক ভাবে পাল্টে যাবে বলে মনে করেন তিনি। আজ সোমবার চারজন সাংবাদিক মাহবুব তালকদারের কাছে লিখিত প্রশ্ন জমা দেন। পরে, সেগুলোর লিখিত উত্তর দেন এই কমিশনার। নির্বাচন কমিশনারের কাছে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনার মতে, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কি? জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমি মোটেই মনে করি না, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু আছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা এখন একটা অর্থহীন কথায় পর্যবসিত হয়েছে।’ সিইসি বলেছেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। আপনি কি তাঁর বিরোধীতা করছেন? এই প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমি কখনো তাঁর বক্তব্যের বিরোধীতা করি না। তিনি তাঁর কথা বলেন। আমি প্রয়োজনে আমার ভিন্ন মত প্রকাশ করি। আপনারা তো সাংবাদিক। আপনারা দেশের সব খবর রাখেন। সবকিছু দেখেন। আপনারা নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কিনা, তাহলে উত্তর পেয়ে যাবেন।’ আরেকজন সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, সারা দেশ থেকে বিরোধী দলের প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আসছে। এ অবস্থায় অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কি সম্ভব? জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, আমি আশাবাদী মানুষ। এখনও যে সময়টুকু আছে, তাতে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ইলেকট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটির বিচারকদের আরো বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করা উচিত। আমি মনে করি, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক ভাবে পাল্টে যাবে। সিইসি বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হবে। আপনিও কি তাই মনে করেন? এই প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, সব দল অংশগ্রহণ করলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া একটা প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কিনা, বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে কিনা। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূলক হলেও কোনো লাভ নেই। নির্বাচনে জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে? জবাবে মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন আমরা সরাসরি করি না। রিটার্নিং কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ শীর্ষ কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আছে। তাদের বাহিনীর সদস্যরা কতটা তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, তা তারা বলতে পারবেন। বর্তমান অবস্থায় আপনার কি কোনো মেসেজ আছে? এই প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, আমার বক্তব্য হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচন এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রার্থী, ভোটার এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ আইনের বাইরে যাবেন না। আইনকে নিজস্ব ধারায় চলতে দিন। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলুন। নির্বাচনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সহায়তা করুন।
মন্তব্য ( ০)