নিউজ ডেস্কঃ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশ মাতোয়ারা হয়ে আছে। এই নির্বাচন বিভিন্ন দেশের আগ্রহ আছে। ভোট কীভাবে শান্তিপূর্ণ হবে সেটা আমি জানি না, তবে ভোটকে সুষ্ঠু করার দায়িত্ব পুলিশ এবং প্রশাসনের।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে দুদিনব্যাপী এই কর্মশালা হচ্ছে।এতে ৩২ জেলার ডিসি-এসপি ছাড়াও বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনারসহ মোট ১১৪ জন অংশ নিচ্ছেন। কর্মশালা শেষ হবে শনিবার।
সিইসি বলেন, নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা গেলে অপপ্রচার দূর করা যাবে। তবে অবাধ সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে সবাইকে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।নির্বাচনকে গণতন্ত্রের বাহন এবং প্রাণ উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোটারদের ভোট প্রদানের স্বাধীনতা যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এসময় ভোটের মাঠে ক্ষমতা প্রয়োগ না করে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন সিইসি।অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘ভোট কীভাবে সুষ্ঠু হবে আমার জানা নেই। ভোট সুষ্ঠু করার দায়িত্ব আপনাদের। আপনাদের প্রতি অনুরোধ, ভোটের মাঠে ক্ষমতা প্রয়োগ করে নয়, দায়িত্ববোধ দিয়ে নির্বাচনকে অনুধাবন করার। তবে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের স্বাধীনতা যাতে ব্যাহত না হয়, সে ব্যাপারে আপনারা সতর্ক থাকবেন।সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে এখন পুরো দেশ মাতোয়ারা। এমনকি এটা গ্লোবাল ডাইমেনশনও পেয়ে গেছে।
নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা থাকলে অপপ্রচার রোধ করা সম্ভব, আপনারা সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। কমিশন থেকে আমরা দেখতে চাই, আপনারা এমনভাবে দায়িত্ব পালন করবেন- যাতে নির্বাচনটা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়। নির্বাচনের গুরুত্বটা আপনারা অনুধাবন করবেন। কারণ গণতন্ত্রের চেতনা বাঁচিয়ে রাখতে ভোটের স্বচ্ছতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ এজন্য নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য এবং প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রাখতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নানা দিকনির্দেশনা দেন সিইসি।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে দ্বিতীয় দফায় দুই দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করল সংস্থাটি। এ পর্যায়ে প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন ৩১ জেলার ডিসি-এসপিসহ ইসির মাঠ প্রশাসনের ১১৪ জন কর্মকর্তা। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলা এই প্রশিক্ষণ শেষ হবে শনিবার।
এ ধাপে প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিসাররা। তবে বিএনপি জোটের হরতাল-অবরোধের কারণে এর আগেও দ্বিতীয় ধাপের এই প্রশিক্ষণের তারিখ তিন দফা পেছানো হয়। এর আগে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রথম পর্যায়ের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয় গত ১৪ ও ১৫ অক্টোবর। সে সময় প্রশিক্ষণে অংশ নেন ১১৬ জন কর্মকর্তা।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, ইসির প্রশিক্ষণ শেষে এই প্রশিক্ষকরাই মাঠপর্যায়ের প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন। এরপর ধাপে ধাপে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই প্রশিক্ষণগুলোতে নির্বাচনী আইন, বিধিমালা, নির্বাচন পরিচালনাবিধি, আচরণবিধিসহ সার্বিক বিষয় তুলে ধরার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব, কর্তব্য ও করণীয় বিষয়ে ধারণা দেওয়া হবে।
মন্তব্য ( ০)