• বিশেষ প্রতিবেদন

গাইবান্ধায় সেচ নির্ভর আমন মৌসুমে বাড়তি খরচে দিশেহারা কৃষক

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ০২ আগস্ট, ২০২৩ ১৮:৫২:৩১

ছবিঃ সিএনআই

গাইবান্ধা প্রতিনিধি :বর্ষা মানেই রাত দিন তুমুল বৃষ্টি। সাধারণত জমি-জমা ও মাঠ-ঘাট ডুবে থাকে পুরো বর্ষায়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই আমন চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কৃষক। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা তার ছন্দ হারিয়েছে। এখনকার বর্ষায় চিরাচরিত সেই বৃষ্টির দেখা মেলা ভার। এবার তো দেশে স্মরণকালের অনাবৃষ্টিও দেখা দিয়েছে। ফলে চলতি আমন মৌসুমে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। ইতিমধ্যে গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে আমন মৌসুমের ধানের চারা রোপণের কাজ। প্রাকৃতিক উৎসের পানি না মেলায় চলতি আমন মৌসুমে এখন পর্যন্ত এ জেলায় কয়েক হাজার সেচ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।

যেসব জমিতে ইতোমধ্যে আমনের চারা রোপন করা হয়েছে, কিন্তু সেচ দেওয়া সম্ভব হয়নি, সেসব মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে কৃষক বাধ্য হয়েই আমন ধানেও সেচ দিচ্ছেন। এতে ধান উৎপাদন খরচ বাড়ছে। অনাবৃষ্টির ফলে এবার আমনের উৎপাদন কম হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভরা বর্ষার আমন চাষ এখন সেচনির্ভর হয়ে উঠছে! জানা গেছে, কৃষি অর্থনীতি নির্ভর গাইবান্ধার অধিকাংশ এলাকায় আমনের মাঠ এখন ফেটে চৌচির। সেসব জমিতে কেউ কেউ সেচ দিচ্ছেন। আবার বৃষ্টি না হওয়ায় বীজতলা পরিপক্ক হলেও অনেক জায়গায় এখনো ধান রোপন করা সম্ভব হয়নি।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুরে সজিব বলেন, এবছর দুই বিঘা জমিতে আগাম জাতের ধানের চারা লাগানোর পরিকল্পনা ছিল কিন্তু বীজতলায় ধানের বীজ ছিটিয়ে দেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা নেই বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিনের সাহায্যে জমিতে সেচ দিচ্ছি। পলাশবাড়ীর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, জমি ও বীজতলা তৈরি, রোপণ, নিয়মতি সেচ, কীটনাশক প্রয়োগ, দুইবার আগাছা বাছাই, সার দেওয়া থেকে ধান মাড়াই পর্যন্ত এক কাঠা জমিতে মোট খরচ হয় প্রায় তিন হাজার ৫০০ টাকা। এর পর প্রতি শতক জমিতে ধান উৎপাদন হতে পারে সর্বোচ্চ দেড় থেকে দুই মণ।

যার বাজার মূল্য ২ হাজার টাকাও পাই না ।তাই লাভের আশা ছেড়ে দিয়ে শুধু ঘরের ভাত খাওয়ার আশায় আমন চাষ করছি। চড়া বাজারে চাল কিনে খাওয়ার মতো সামর্থ্য আরও অনেক কৃষকেরই নেই। তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতেও সরকার যদি কৃষকের চাষাবাদ খরচ ও ধানের দামে সমন্বয় না করে তাহলে কৃষক সমাজ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, জেলায় এবছর ১২,৭,৪৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেচ পাম্প বসিয়ে আমন ধান রোপণ করতে। অনেক কৃষক সেটা শুরু করলেও বেশিরভাগ কৃষকই অপেক্ষা করছে বৃষ্টির। ক্ষুদ্র এমন অনেক কৃষক রয়েছে যাদের সামর্থের অভাবেই অনীহা রয়েছে সেচ দিয়ে আমন রোপণে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo