ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের দিন পরিবহন ধর্মঘট হবেনা, দিনাজপুরে ওবায়দুল কাদের

ছবিঃ সিএনআই

সালাহ উদ্দিন আহমেদ, দিনাজপুর: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের দিন পরিবহন ধর্মঘট হবেনা। এজন্য দলীয় এমপি সাবেক মন্ত্রী  পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খানের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি। কোন বাধা দেওয়া হবেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন তবে কোন নৈরাজ্য করা হলে প্রতিহত করা হবে।  

দীর্ঘ ১০ বছর পর সোমবার দুপুরে দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে  আওয়ামী লীগের জেলা  ত্রি- বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের। 

ওবায়দুল কাদের  বলেন, ৭৫ সালে অমানবিকভাবে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে স্ব পরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। কারবালার নির্মতার চেয়েও ভয়াবহ হত্যাকান্ড পৃথিবীর কোথাও এমন জঘন্যতম হত্যাকান্ড ঘটেনি। নারী শিশুও রক্ষা পায়নি। ১৫ আগষ্ট ৩ রা নভেম্বরের ওই হত্যাকাণ্ডের ( মাষ্টার মাইন্ড ছিলেন জিয়াউর রহমান।  আর ২১ আগস্টের বোমা হামলার পরিকল্পনায় ছিলেন হাওয়া ভবনের যুবরাজ তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ১৩ বছরে আন্দোলন সফল করতে পারেননি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক উদার। তিনি উদার বলেই আদারতে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়েও বেগম খালেদা জিয়া  জেলখানার পরিবর্তে বাড়িতে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে বাড়িতে থাকতে অনুমতি দিয়েছেন। ঢাকার বিএনপির মহাবেশের কারনে ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনার বাড়ি তো ঠাকুরগাঁওয়ে। সমাবেশ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ও সমাবেশ দেখে যান। কোথায় কথায় বলেন আপনাদের সমাবেশে ঢল নেমেছে। কথায় কথায় তরঙ্গ নেমেছে। কিন্তু ঢল কাকে বলে, নদী আর সাগরের তরঙ্গ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুরে এসে দেখে যান। আপনারা সমাবেশের তিন দিন আগে থেকে হান্ডি, পাতিল, বিছানা, বালিশ নিয়ে নাটক শুরু করেন। সেই নাটকের অংশ থাকে মশার কয়েল। পিকনিক খান, হায়রে নাটক। 

আগামী ডিসেম্বরে খেলা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা বিদেশে পাচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ।  খেলা হবে নির্বাচন, আন্দোলন নিয়ে।  ১৫ ফেব্রুয়ারির মত নির্বাচন আর হবে না। সুষ্ঠু ভোট হবে। নির্বাচনে সময় রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন শেখ হাসিনা।  সে সময় একটা নিরপেক্ষ ভোট হবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত। 

 নির্বাচনকে সামনে রেখে মারামারি করবেন না। আপনারা উস্কানি দিবেন না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কিন্তু মাঠ ছেড়ে দেয় নাই। আপনারা আমাদের উপর হামলা করবেন, আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব। এটা কি হয়?

প্রধান বক্তা হিসেবে দলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক  তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বিএনপিকে শীতের সাইব্রেরিয়ান অতিথি পাখি এবং পুটিমাছের সাথে তুলনা করে বলেন, শীতের পাখি হয়ে ধান খেয়ে যান। বৃষ্টি হলে পুটি মাছের মত লাফ্ফান, কিন্তু বোয়াল মাছে গোপ করে খেয়ে ফেলবে।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এমপি।   অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন  প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী  সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, সাবেক মন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি, মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি, শিবলী সাদিক এমপি ও এ্যাড. জাকিয়া তাবাসসুম জুই এমপি প্রমুখ।

এর আগে জাতীয় দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। প্রথমার্ধে সম্মেলন শেষে সেতু মন্ত্রী কপ্টারে চড়ে উড়ে যান জামালপুরের দলীয় সম্মেলনে।

কমিটি ঘোষনা

প্রথমার্ধের সম্মেলন শেষ করে সিলেকশনের মাধ্যমে জেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপিকে পুনরায় সভাপতি মনোনিত করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য পদের মধ্যে বিদায়ী সাধারন সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী ও এ্যাডবোকেট তহিদুল ইসলামকে সহসভাপতি এবং আলতাফুজ্জামান মিতাকে সাধারন সম্পাদক,  শাহ ইয়াস দান মার্শাল ও ফারুকুজ্জামান চৌধুরীকে পুনরায় যুগ্ম সম্পাদক মনোনিত করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রাথমিক কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে।