• অর্থনীতি
  • লিড নিউজ

চাটমোহরে গবাদিপশুর খাদ্যের চাহিদা মেটাতে উৎপাদিত হচ্ছে যব

  • অর্থনীতি
  • লিড নিউজ
  • ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ১৫:২৪:৩৮

ছবিঃ সিএনআই

পাবনা প্রতিনিধিঃ মানুষের খাদ্য হিসেবে এক সময় যব ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। বিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়েও চাটমোহরেরর বিস্তীর্ণ এলাকায় যব উৎপাদন হতো। মানুষ্যের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ফলে ক্রমশই যব উৎপাদন কমতে থাকে। একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে চাটমোহরে যব উৎপাদন হচ্ছিলনা বললেই চলে। বর্তমান সময়ে গবাদী পশুর খাদ্য চাহিদা মেটাতে পাবনার চাটমোহরের খামারীরা কিছু জমিতে ফের যবের চাষ শুরু করেছেন। অন্যান্য ঘাসের পাশাপাশি যবের নরম কান্ড ও পাতা গবাদী পশুকে খাওয়াচ্ছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক দশক পূর্বে চাটমোহরের অনেক এলাকায় যবের চাষ হতো। ধীরে ধীরে কমে যায় যব চাষের পরিধি। তবে বর্তমান সময়ে এ এলাকায় অনেক গরুর খামার গড়ে ওঠায় গরুর খামারীরা বিভিন্ন এলাকার মাঠে এক বীজপত্রী দানা জাতীয় উদ্ভিদ যবের চাষ শুরু করেছেন। খামারী ব্যতীত কিছু কৃষক যব চাষ করলেও তা গবাদী পশু খামারীদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন তারা। সীমিত সংখ্যক কৃষক যব পাকিয়ে দানা সংগ্রহ করছেন।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি রবি মৌসুমে চাটমোহরে ১০ হেক্টর জমিতে যব চাষ হয়েছে। এর অধিকাংশই গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গুনাইগাছা, মূলগ্রাম, ফৈলজানা ও ডিবিগ্রাম ইউনিয়নে অপেক্ষাকৃত বেশি জমিতে যব চাষ হচ্ছে। 

চাটমোহরের গুনাইগাছা ইউনিয়নের পৈলানপুর গ্রামের গরুর খামারী মোজাম্মেল হক জানান, আমাদের গ্রামের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ গরু পালন করেন। অনেক বড় বড় খামারী ও রয়েছেন এ গ্রামে। ২০ টি গাভীসহ ৩৬ টি গরু রয়েছে আমার। খড় খাওয়ালে গরুর দুধ কম হয়। খড়, ভুট্রাসহ অন্যান্য গোখাদ্যের দাম ও বেশি। তাই প্রায় বছর তিনেক হলো আমরা যব চাষ শুরু করেছি। এ বছর আমি আড়াই বিঘা জমিতে যব চাষ করেছি। বর্তমান গরুকে যবের কান্ড পাতা কেটে খাওয়াচ্ছি। সীমিত পরিসরে অন্যান্য খাবার ও দিচ্ছি। আমার মতো আরো বেশ কিছু খামারী যব চাষ করেছেন। যব খাওয়ালে গাভী বেশি দুধ দেয়। প্রতি বিঘা জমির যব গোখাদ্য হিসেবে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি ও হচ্ছে।

মোজাম্মেল হকের মতোই চাটমোহরের বিভিন্ন ইউনিয়নের গোখামারীরা গবাদী পশুর খাদ্য চাহিদা মেটাতে যব চাষ শুরু করেছেন। অন্যরা জানান, গবাদী পশুকে যব খাওয়ানোর সুফল পাচ্ছেন তারা।

চাটমোহর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, যবের কান্ড ও পাতা গোখাদ্য হিসেবে বেশ উন্নত। যবে যখন ফল ধরে তখন তা দিয়ে সাইলেস তৈরী করে গবাদীপশুকে খাওয়ানো ভাল। যবের দানা সিদ্ধ করেও খাওয়ানো যায়। যব সংগ্রহ করার পর যবের কান্ড থেকে তৈরী ভুশিও গবাদী পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ডাঃ রুহুল কুদ্দুস ডলার সিএনআইকে জানান, মানুষের খাদ্য হিসেবেও যব উন্নত মানের। যব থেকে তৈরী খাবার সহজে হজম যোগ্য। এটি ডায়াবেটিস এর জন্য বেশ উপকারী। যবের আটা খেলে রক্তের শর্করা বৃদ্ধি পায় না। যব মেদের বৃদ্ধি কমায়। যারা মূত্রকৃচ্ছতায় ভোগেন তাদের জন্যও যব উপকারি। রক্ত পিত্ত দূরীকরণ, পেটের অসুখ নিরাময়ে ও গর্ভপাতের প্রবনতা রোধে যবের খাবার ভূমিকা রাখে। এছাড়াও লিভারের অসুখ, প্লীহা, অজীর্ণ, কোষ্ঠকাঠিন্য ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যব বেশ উপকারি বিধায় তা পথ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo